চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অবস্থানরত একটি বিদেশি জাহাজে দুই ঘন্টার ব্যবধানে দুই বিদেশি নাবিকের মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহষ্পতিবার রাতে এই ঘটনা ঘটলে সেটি জানা যায় শুক্রবারে। কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে সেই মৃত্যুর খবর চেপে রাখা হয়। কিন্তু চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করতে গিয়েই বিষয়টি প্রকাশ পায়।
‘এপি এসটেরা’ জাহাজটি এখন বহির্নোঙরে আলফা অ্যাংকরেজে আছে। সেই জাহাজের দুই নাবিক ইউক্রেনের বাসিন্দা। জাহাজটি ইউরিয়া সার নিয়ে এসেছিল বেলারুশ এবং মিশর থেকে। ১৯ সেপ্টেম্বর জাহাজ থেকে ৩৫ হাজার টন ইউরিয়া সার ছোট জাহাজে নামিয়ে আজ শুক্রবার বাকি সার নিয়ে জাহাজটি মোঙলা বন্দরে যাওয়ার কথা ছিল। তার আগেই এই বড় দুর্ঘটনা ঘটলো।
একসাথে দুই নাবিকের মৃত্যুর পর করোনা আ্ক্রান্ত হয়ার খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। সেটি নিশ্চিত করতে পোর্ট হেলথ কর্মকর্তা ডা. নুরুল আবসার আজ শুক্রবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে যান। চোখে দেখে তিনি বলেন, এটা কভিডের মৃত্যু নয়। কিভাবে বুঝলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, লক্ষন কভিডে নয়। এখনো কভিড টেস্ট করিনি। ময়নাতদন্তের সময় সেটি নিশ্চিত করা যাবে।
এদিকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এখনো নিশ্চিত নয় মৃত্যু কভিডে নাকি কোন জখমে ঘটেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করতে পতেঙ্গা থানায় সাধারন ডায়েরি করেছে জাহাজটির শিপিং এজেন্ট শোরলাইন সার্ভিসেস লিমিটেড। পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত করবে কোন ক্রিমিনাল কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেনি। একইসাথে জাহাজের পিএন্ডআই ক্লাব হিসেবে কাজ করছে ইন্টারপোর্ট। তারা নাবিকের ইন্স্যুরেন্স এবং লাশ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
জহাজটির স্থানীয় এজেন্ট শোরলাইন সার্ভিসেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হোসাইন টুটুল জানান, হঠাৎ অসুস্থ হয়ে বিদেশি জাহাজের দুই নাবিক মারা গেছেন। আন্তর্জাতিক নিয়মে মরদেহ ময়নাতদন্ত করে ফ্লাইটে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা।
গত বৃহষ্পতিবার কর্মরত অবস্থায় হঠাৎ অসুস্থ বোধ করলে এক নাবিক জাহাজেই মারা যান। এরপর একই জাহাজের আরেক নাবিক অসুস্থ হলে জরুরিভিত্তিতে তাকে বহির্নোঙর থেকে স্পিডবোটে করে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলে হাসপাতালে নেয়া হয়। সেদিন তিনিও মারা যান। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হয় শুক্রবার সকালে; যখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নাবিকের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছিল।
দুই নাবিকই ইউক্রেনের বাসিন্দা। বেলারুশ থেকে ইউরিয়া সার নিয়ে ‘এপি এসটেরা’ জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছে। চট্টগ্রামে সার নামিয়ে বাকি সার নিয়ে জাহাজটি শুক্রবারই মোংলা বন্দরে যায়ার কথা ছিল। এর আগেই দুর্ঘটনায় মারা গেলেন দুই নাবিক। এখন জাহাজটি বন্দরের বহির্নোঙরে আলফা অ্যাংকরেজে আছে।
জানা গেছে, ‘এপি এসটেরা’ জাহাজটি ১৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোংরে পৌঁছে ৫৫ হাজার টন ইউরিয়া সার নিয়ে। চট্টগ্রামে ৩৫ হাজার টন সার জাহাজ থেকে নামানেরা পর বাকি ২০ হাজা টন সার নিয়ে জাহাজটি শুক্রবার মোঙলা বন্দরে যাওয়ার শিডিউল ছিল।