বন্দরবাংলা নিউজ

গভীর সমুদ্রবন্দর – আজ হেলিকপ্টারে মাতারবাড়ি যাচ্ছেন দুই মন্ত্রী

কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর পরিদর্শনে যাচ্ছেন দুই মন্ত্রী। আজ মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীসহ ১২ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের টিম যাচ্ছে মাতারবাড়িতে। ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে প্রতিনিধিগন মাতারবাড়িতে পৌছাবেন। এলক্ষ্যে ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের উর্ধতন কর্মকর্তাগন গতকাল সোমবার মাতারবাড়িতে পৌছেছেন।

জানা যায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও নৌ প্রতিমন্ত্রীর সাথে পরিদর্শনে যাচ্ছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক, বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর সহকারী নৌ প্রধান, ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক, এনএসআইয়ের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক।

মাতারবাড়ি বন্দরের কার্যক্রম পরিদর্শণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও নৌ প্রতিমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ আজ মঙ্গলবার আসার কথা স্বীকার করে মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মীর জাহিদ হাসান বলেন,‘নেতৃবৃন্দ মাতারবাড়ি বন্দর ছাড়াও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং ওই এলাকার অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কার্যক্রমও দেখবেন।’

এদিকে মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দর ছাড়াও কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। এই কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্যই বঙ্গোপসাগর ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে ১৪ দশমিক ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যানেল খনন করা হয়েছে। এই চ্যানেলের সুযোগ নিয়েই এখানে গড়ে তোলা হচ্ছে গভীর সমুদ্র বন্দর। ১৬ মিটার ড্রাফট (গভীরতা) এবং ২৫০ মিটার চওড়া চ্যানেল নির্মাণ হয় বিদ্যুৎ প্রকল্পের আওতায়। ইতিমধ্যে ১৪ মিটার ড্রাফট করাও হয়েছে আগামীতে ‘মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প’ এর আওতায় ড্রাফট ১৬ মিটারে উন্নীত করা হবে। একইসাথে চ্যানেলের চওড়া আরো ১০০ মিটার বাড়ানো হবে। নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্মিত এই প্রকল্পের বাজেট ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি ১৬ লাখ ১৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে জাইকার ঋণ ১২ হাজার ৮৯২ কোটি ৭৬ লাখ ৫ হাজার টাকা, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (নিজস্ব তহবিল) ২ হাজার ২১৩ কোটি ২৪ লাখ ৯৪ হাজার টাকা এবং বাংলাদেশ সরকারের ২ হাজার ৬৭১ কোটি ১৫ লাখ ১৪ হাজার টাকা। ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। দেশে দিন দিন আমদানী রপ্তানি বাণিজ্য বাড়ছে। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেশের ৯২ শতাংশ পণ্য আমদানী-রপ্তানি হয়ে থাকে। কিন্তু এখানে ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যরে বড় জাহাজ ভিড়তে পারে না। এই বন্দরের সর্বোচ্চ গভীরতা ৯ দশমিক ৫ মিটার। তাই বড় দৈর্ঘ্য ও বেশি ড্রাফটের জাহাজ ভেড়াতে মাতারবাড়ির বিকল্প নেই। মাতারবাড়ি চালু হলে এর সাথে চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা বন্দরের সাথে নেটওয়ার্ক আরো বাড়বে। কারণ বড় জাহাজগুলো মাতারবাড়িতে পণ্য নিয়ে আসবে। সেখান থেকে ছোটো জাহাজে করে দেশের অন্যান্য বন্দরগুলোতে পণ্য পরিবহন অনেক সহজ হবে। ফলে গভীর সমুদ্র বন্দরের অভাব পূরণ করবে মাতারবাড়ি বন্দর। এই বন্দরের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া চলমান এবং পরামর্শক প্রতিষ্ঠান তাদের কাজ করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button