চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে ভিড়া সব কন্টেইনার জাহাজ আমদানি পণ্য নামিয়ে এবং রপ্তানি পণ্য জাহাজে উঠিয়ে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ছেড়ে যাওয়ার মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। মুলত দ্রুত পণ্য উঠানামা নিশ্চিত করে বন্দরের গতিশীলতা বাড়াতেই এমন নির্দেশনা বন্দরের।
কিন্তু বন্দরের এই নির্দেশনা ছিল মৌখিক, লিখিত কোন নির্দেশনা ছিল না। শিপিং এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাথে গত বৃহষ্পতিবার বৈঠক এবং বার্থিং বৈঠকে হারবার মাষ্টারের এমন মৌখিক নির্দেশনার পর হৈ চৈ ফেলে দিয়েছে গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। নির্দেশনা প্রত্যাহার বা শিথিলের জন্য চিঠি দিয়েছে বিজিএমইএ।
জাহাজের বন্দর জেটিতে অবস্থানকালীন সময়ে কড়াকড়ির কারণে বিপুল ক্ষতির সম্মূখীন হতে হচ্ছে দাবি করে বিজিএমইএ’র ১ম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এমনিতে পোশাকের রপ্তানি অর্ডার কমে আসছে। এই সময়ে জাহাজের বন্দর জেটিতে অবস্থানকালীন সময় নিয়ে কড়াকড়ির কারণে রপ্তানি কন্টেইনারগুলো মাদার ভেসেল ধরতে না পারলে অর্ডার বাতিল, এয়ারশিপমেন্ট কিংবা স্টকলট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। এমন অবস্থায় আমরা বন্দর কর্তৃপক্ষকে এটা বাস্তবায়ন না করার জন্য লিখিত অনুরোধ করেছি।’
কিন্তু দ্রুত পণ্য ছাড় করে বন্দরের গতিশীলতা বাড়াতে বিজিএমইএ বারবার বিভিন্ন ফোরামে জোর দাবি জানায়। এখন সেই সংগঠনই ৪৮ ঘন্টায় কন্টেইনার জাহাজ বন্দর ছাড়ার কৌশলে বিরোধিতা করছে।
বিজিএমইএ যুক্তি হচ্ছে, ‘শিপিংলাইনগুলো এত অল্প সময়ে মধ্যে কন্টেইনার ব্যবস্থা করতে পারছে না। তাছাড়া করোনাকালীন সময় থেকে কন্টেইনারের দামও অনেক বেশি। তাছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যানজট, প্রাইভেট আইসিডি’র অবকাঠামোগত সমস্যা, বন্দর জেটিতে রপ্তানিবাহী কন্টেইনার সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত স্থান স্বল্পতা, জাহাজের ক্রেন দিয়ে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এ ধীরগতির কারণেও যথাসময়ে নির্ধারিত সময়ে জাহাজীকরণ সম্ভব হচ্ছে না।’
বিজিএমইএ বলছে, গত চারদিনেই ২টি কন্টেইনার জাহাজ বুকিং থাকা সত্ত্বেও ৭৬ একক কন্টেইনার রপ্তানি না নিয়েই চট্টগ্রাম বন্দর ত্যাগ করেছে। এই দুটি জাহাজই হচ্ছে, বাংলাদেশি কর্ণফুলী গ্রুপের এইচআর লাইনের। অথচ একই গ্রুপের এমএসসি’র তিনটি বিদেশি কন্টেইনার জাহাজ ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই পণ্য নামিয়ে রপ্তানি পণ্য তুলে চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়েছে।
এমএসসি’র এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আমাদের তিনটি জাহাজই সব সম্পন্ন করে বন্দর জেটি ছেড়েছে। এটা আমাদের জন্য অনেক খুশির। কারণ একদিন বা ২৪ ঘন্টা জেটিতে কম থাকা মানে সবদিক থেকেই সাশ্রয়ী। শেষপর্যন্ত দেশের বাণিজ্যখাতই তো লাভবান হবেন। তবে এটা ঠিক বন্দর একেবারে কঠোর না হয়ে যাদের একটু বাড়তি সময় লাগে তাদেরকে ছাড় দিতে পারে।