৩২শ কিলোমিটার নৌপথ পাড়ি দিবে ‘গঙ্গা বিলাস’ যাবে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে

বিশ্বের দীর্ঘতম বিলাসবহুল নদী ক্রুজ বা নৌবিহার ‘গঙ্গা বিলাস’ এর যাত্রা আজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। ভারতের উত্তর প্রদেশের বারাণসী থেকে আসাম পর্যন্ত চলবে এই ক্রুজ। মাঝপথে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার নদী পাড়ি দিবে।
বারাণসী থেকে ডিব্রুগড় পর্যন্ত যাবে ‘গঙ্গা বিলাস’। মোট ৩ হাজার ২০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করবে। বারাণসীর রবিদাস ঘাট থেকে যাত্রা শুরু করে ভারতের পাঁচটি রাজ্য অতিক্রম করবে সেই বিলাসবহুল প্রমোদতরী। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা এবং বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাকে ছুঁয়ে যাবে। ভারত ও বাংলাদেশ মিলিয়ে মোট ২৭ টি নদীতে চলবে ‘গঙ্গা বিলাস’।
বক্সার, রামনগর এবং গাজিপুর হয়ে যাত্রা শুরুর অষ্টম দিনে পাটনায় পৌঁছাবে ‘গঙ্গা বিলাস’। ২০তম দিনে পৌঁছাবে কলকাতায়। সেখান থেকে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবে। তারপর গুয়াহাটি ও শিবসাগর হয়ে ৫১ তম দিনে পৌঁছাবে ডিব্রুগড়ে।
‘গঙ্গা বিলাস’-এর প্রথম যাত্রায় আছেন সুইজারল্যান্ডের ৩২ জন পর্যটক। তাদের একজন বলেন, ‘এই ক্রুজটি একেবারে নতুন। কর্মীরা দুর্দান্ত। ঘরগুলো দারুণ। আগামী পাঁচ সপ্তাহে আমরা গঙ্গা এবং ব্রহ্মপুত্রের উপর দিয়ে যাব।’
হেরিটেজ তকমা পাওয়া বিভিন্ন জায়গাসহ যাত্রাপথে ৫০টি জায়গায় দাঁড়াবে ‘গঙ্গা বিলাস’। যে জায়গাগুলো স্থাপত্যের দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যাত্রাকে আরও রোমাঞ্চকর করে তুলতে সুন্দরবন ও কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানসহ অভয়ারণ্য, জাতীয় উদ্যানের মধ্যে দিয়ে যাবে ক্রুজ।
‘গঙ্গা বিলাস’ নামের এই ক্রুজের দৈর্ঘ্য ৬২.৫ মিটার ও প্রস্থ ১২.৮ মিটার। বিলাসবহুল ‘গঙ্গা বিলাস’-এ মিলবে পাঁচতারা হোটেলের মতো সেবা। মোট ৮০ জন যাত্রী থাকতে পারবেন এতে। আর এই প্রমোদতরীতে আছে ১৮টি লাক্সারি স্যুট।
ভারতের পর্যটন দপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, স্যুটের ডিজাইনে সবাই মুগ্ধ হবেন। স্যুটে শাওয়ারসহ বাথরুম, রূপান্তরযোগ্য বিছানা, ফ্রেঞ্চ ব্যালকনি, এলইডি টিভি, স্মোক ডিটেক্টর, লাইভ ভেস্ট, স্প্রিঙ্কলার রয়েছে।
ঐতিহ্যবাহী ও সমসাময়িক অন্দরসজ্জার ফিউশন করে ক্রুজটির স্যুটগুলো সাজানো হয়েছে। অ্যাপার্টমেন্টগুলোতে বিশেষ বিশেষ রং ব্যবহারের মাধ্যমে এক ধরনের শান্ত-মনোরম অন্দরমহল তৈরি করা হয়েছে।
‘গঙ্গা বিলাস’-এর অন্দরে রয়েছে দামি রেস্টুরেন্ট এবং সানডেক। এর প্রধান ডেকে থাকা ৪০ আসন বিশিষ্ট রেস্টুরেন্টের ভেতরে কন্টিনেন্টাল ও ভারতীয় খাবারদাবারসহ কয়েকটি ব্যুফে কাউন্টার রয়েছে। কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, উপরের ডেকের আউডোর ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে রিয়েল টিক স্টিমার চেয়ারসহ একটি বার এবং কফি টেবিল, যেখানে সবচেয়ে সেরা সেবা দেওয়া হবে যাত্রীদের।