২০২১ সাল। কন্টেইনার উঠানামায় ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি চট্টগ্রাম বন্দরে

অবশেষে ৩২ লাখ একক কন্টেইনার উঠানামা করে নতুন রেকর্ড গড়লো চট্টগ্রাম বন্দর। ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩২ লাখ ১৪ হাজার একক কন্টেইনার উঠানামা করতে সক্ষম হয়েছে দেশের প্রধান এই সমুদ্রবন্দর। এরমধ্য দিয়ে আগের সব রেকর্ড ভাঙলো পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে এককভাবে নির্ভরশীল চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর। এবার পণ্য উঠানামায় আগের ২০২০ সালের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ শতাংশ। আর ২০১৯ সালের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৪ শতাংশ।
মুলত করোনা মহামারির ধাক্কায় চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য উঠানামা অনেক কমেছিল ২০২০ সালে। সেই বছর পণ্য উঠানামা হয়েছিল ২৮ লাখ ৩৯ হাজার একক; সেই বছর নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে এই বন্দরে। কিন্তু করোনা শুরুর আগে ২০১৯ সালে এই বন্দরে পণ্য উঠানামা রেকর্ড ছুঁয়েছিল; যার পরিমান ৩০ লাখ ৮৫ হাজার একক কন্টেইনার। আর ২০২১ সালে পণ্য উঠানামার সর্বকালের রেকর্ড ছুঁয়েছে; যার পরিমান ৩২ লাখ ১৪ হাজার একক। ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২১ সালে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৪ শতাংশ।
চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম. শাহজাহান বলছেন, করোনা মহামারির সময় চট্টগ্রাম বন্দর ২৪/৭ চালু থাকলেও আমদানি-রপ্তানিতে ধাক্কা লাগায় এর প্রভাবে বন্দরে পণ্য উঠানামা কমে গিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের চ্যালেঞ্জিং সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের সুফল আমরা ২০২১ সালে পেয়েছি। করোনা ধাক্কা কাটিয়ে বাংলাদেশ যে আগের অর্থনীতির গতিতে ফিরেছে এর বড় প্রমান চট্টগ্রাম বন্দরের পণ্য উঠানামা।
তিনি বলেন, গত বছর বিশ্বসেরা বন্দরের তালিকায় আমরা পিছিয়ে পড়লে এবার ২০২২ সালে আশা করছি আগের চেয়ে অনেক ধাপ এগিয়ে যাব। বন্দর ব্যবহারকারী, বন্দরের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর অক্লান্ত প্রচেষ্টার ফসল এই অর্জন।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের পুরো বছরই চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারকারীদের জন্য ভালো সময় ছিল। বহির্নোঙরে পৌঁছার পর একটি কন্টেইনার জাহাজকে সাধারন দুই থেকে তিনদিন অপেক্ষার পরই জেটিতে ভিড়তে পারত। এটা অনেকটা স্বাভাবিকই ছিল জাহাজ পরিচালনাকারীদের। কিন্তু ২০২১ সালের শেষ ৫ মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে বেশিরভাগ কন্টেইনার জাহাজ জেটিতে ভিড়তে সময় নিয়েছে শুন্য দিন অর্থ্যাৎ অন এরাইভাল বার্থিং পেয়েছে জাহাজগুলো। অথচ ট্রান্সমিপমেন্ট বন্দরে একটি কন্টেইনার জাহাজ ভিড়তে এক সপ্তাহের বেশি সময় লাগছিল। এর ধকল অবশ্য পড়েছিল চট্টগ্রাম বন্দরে কিন্তু ব্যবহারকারীদের সাথে বসে নতুন কৌশল রপ্ত করে দ্রুত বিষয়টির সমাধান করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এরফলে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি চট্টগ্রাম বন্দরকে।
জানতে চাইলে জেএসি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিমুল মজুমদার বলেন, করোনা ধাক্কা অত্যন্ত দক্ষতার সাথেই মোকাবিলা করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কোন সন্দেহ নেই। বাইরের বন্দরগুলোতে যখন করোনা নিয়ে দুঃসময় পার করছিল তখন চট্টগ্রাম বন্দর পুরোদমে সচল ছিল। এর এতে আন্তরিকভাবে বন্দর ব্যবহারকারীরা কাজ করায় এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। আমরা এই অর্জন ধরে রেখে এগুতে চাই।