Portsবাংলা নিউজ

১ ডিসেম্বর থেকে স্বয়ংক্রিয় ডেলিভারি পদ্ধতিতে চট্টগ্রাম বন্দর

১ ডিসেম্বর থেকে স্বয়ংক্রিয় ডেলিভারি পদ্ধতিতে চট্টগ্রাম বন্দর
বিশেষ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্যছাড়ে এবার অনলাইন ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ; অর্থ্যাৎ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডেলিভারি পদ্ধতি চালু হচ্ছে। ১ ডিসেম্বর থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ছয়টি শিপিং লাইন এই পদ্ধতিতে কাজ করবে, সফলতা শেষে পরবর্তীতে সব শিপিং লাইনের জন্য এই পদ্ধতি বাধ্যতামুলক করা হবে।

এতদিন চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য ছাড়ের ক্ষেত্রে সনাতন পদ্ধতি অর্থ্যাৎ ডকুমেন্ট নিয়ে সরাসরি গিয়ে আবেদন এবং অনুমতি নিতে হতো। এতে প্রচুর সময়ক্ষেপন হতো, ভোগান্তি হতো। বিশেষ করে সাপ্তাহিক বন্ধের দিন কিংবা অফিস সময়ের পর এই ডেলিভারি অর্ডার নিতে বড় জটিলতায় পড়তে হতো। নতুন এই পদ্ধতি চালু হলে সেই পুরনো পদ্ধতির অবসান হবে। ভুয়া স্বাক্ষর দিয়ে, কাগজপত্র জাল করে বন্দর থেকে পণ্য ছাড় নেয়া বন্ধ হবে; একইসাথে পণ্যছাড়ের অনুমতি পেতে সময়ও সাশ্রয় হবে।

চট্টগ্রাম বন্দর সদস্য (সদস্য ও পরিকল্পনা) জাফর আলম বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ছয়টি শিপিং কম্পানি দিয়ে আমরা এই কাজটি পরীক্ষামূলকভাবে করতে চাই। সেখানে ত্র“টি-বিচ্যুতি দুর করে আগামী ৩/৪ মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে পারলে ডিজিটাল চট্টগ্রাম বন্দরে এটি আরেকটা বড় অগ্রগতি হবে। এজন্য সবার আন্তরিক সহযোগিতা অপরিহার্য। বন্দর ২৪/৭ খোলা থাকলেও স্টেকহোল্ডাররা সমানতালে খোলা থাকে না। এই পদ্ধতিতে দিনে-রাতে এমনকি বন্ধের দিনও কাজ করার সুযোগ আছে।

তিনি বলেন, ইলেকট্রনিক ফাইলে একটি কিউআর কোড থাকবে বন্দর গেইটে কর্তব্যরত কর্মকর্তা সেই কোড স্ক্যান করেই নিশ্চিত হবেন চালানটি সঠিক কিনা। এরফলে জালিয়াতি যেমন বন্ধ হবে, তেমনি বিপুল সময় সাশ্রয় হবে। ভোগান্তি কমবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে ছয়টি শিপিং লাইনকে এই পদ্ধতি চালুর জন্য নির্বাচিত করেছে। সেগুলো হচ্ছে, এপিএল বাংলাদেশ লিমিটেড, মায়ের্কস লাইন বাংলাদেশ লিমিটেড, কন্টিনেন্টাল ট্রেডার্স বিডি লিমিটেড, কন্টিনেন্টাল ট্রেডার্স, ওশান ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, মেডিটেরানিয়ান শিপিং কোম্পানি।
জানতে চাইলে ওশান ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক ওয়াহিদুল আলম বলেন, ‘এই কাজটা করতে পারলে অনেক বড় অগ্রগতি হবে ব্যবসা-সহায়ক হবে, অনেক ঝামেলা-হয়রানিমুক্ত হবে। আমরা নিজেরাও চাই এই পদ্ধতিতে যেতে, চট্টগ্রাম বন্দরও চাইছে সেটা চালু করতে। আজ শনিবার আমরা ছয় কম্পানি বসে ভুল-ত্রুটি নিয়ে আলোচনা করেছিল। আমরা চাই আগে চালু হোক। এরপর বন্দরের সাথে বসে সেটি দুর করার চেষ্টা করবো।

জানা গেছে, অনলাইনে এই পদ্ধতি চালু করতে ইতোমধ্যে একটি পোর্টাল তৈরী করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। সেই পোর্টালে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার, শিপিং এজেন্টকে লগ ইন করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। জাহাজ থেকে নামানো পণ্য বন্দর থেকে ছাড়ের আগে সংশ্লিষ্ট সিঅ্যান্ডএফ প্রথমে ‘পোর্ট কমিউনিটি সিস্টেম’ পোর্টালে লগ ইন করে ইলেকট্রনিক ডেলিভারি অর্ডার (ইডিও) পেতে আবেদন করবেন; একইসাথে সেই আবেদনের তথ্য শিপিং লাইন ও ফ্রেইট ফরোয়ার্ডারকে অবহিত করবেন। এরপর জাহাজের মেইন লাইন অপারেটর বা শিপিং লাইন একই পোর্টালে লগইন করে চালানের বিপরিতে মাশুল আদায় করবেন। এরপর এই আবেদন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এবং ফ্রেইট ফরোয়ার্ডারকে পাঠাবেন এবং নির্ধারিত সময় উল্লেখ করবেন। পরবর্তীতে ফ্রেইট ফরোয়ার্ডারও একইভাবে লগইন করে নিজেদের মাশুল আদায় করে, সেই ডেলিভারি অর্ডার পোর্টালে আপলোড করবেন।
এরপর বন্দর কর্তৃপক্ষের ওয়ানস্টপ সার্ভিস সেন্টার সেই ইডিও দেখে যাচাই করবেন এবং অনুমোদন দিবেন। পুরো কাজটি করতে কত সময় লাগবে সেটি এখনো নিশ্চিত নন চট্টগ্রাম বন্দর কিংবা শিপিং লাইন বা বন্দর ব্যবহারকারীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button