১১শ একক কন্টেইনার রপ্তানি পণ্য নিয়ে ৬ দিন ধরে বহির্নোঙরে আটকা ‘এমএসসি কায়েমি’

বিশেষ প্রতিনিধি
প্রায় ১১শ একক রপ্তানি পণ্যবোঝাই করে ৬ দিন ধরে বহির্নোঙরে আটকে আছে বিদেশি জাহাজ ‘এমএসসি কায়েমি’। চট্টগ্রাম বন্দর জেটি থেকে রপ্তানি পণ্য বোঝাই করে জাহাজটি ২০ জুলাই বন্দর ছাড়ে। এরপরই উচ্চ আদালতের নির্দেশে জাহাজটি আটক করে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
জাহাজটি এমন সময় আটক হলো, যখন কলম্বোগামি বিপুল রপ্তানি পণ্য বেসরকারী কন্টেইনার ডিপোতে আটকে আছে। এর এই পণ্য দ্রুত জাহাজীকরণে জোর দিচ্ছে বন্দর কর্তৃূপক্ষ। এজন্য কলম্বোগামি জাহাজকে জেটিতে ভিড়তে অগ্রাধিকার দিচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। একইসাথে কলম্বােগামি সাতটি নতুন জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে। সেই সুবিধার আওতায় জাহাজটি রপ্তানি পণ্য বোঝাই করেই আটক হলো।
জানা গেছে, মুলত বাংলাদেশি এক পণ্য আমদানিকারকের সাথে বিদেশি সরবরাহকারীর এলসি সংক্রান্ত আর্থিক লেনদেন জটিলতায় ‘এমএসসি কায়েমি’ জাহাজের বিরুদ্ধেই উচ্চ আদালতে মামলা করে দেয় খোদ আমদানিকারক ঢাকা শ্যামপুরের ‘আরবি কনকাস্ট এন্ড রি রোলিং মিলস’ । হাইকোর্টের এডমিরালিট স্যুট মামলা আমলে নিয়ে ১৯ জুলাই জাহাজটি আটকের নির্দেশ দিলে বিপাকে পড়ে জাহাজে থাকা পণ্যের রপ্তানিকারক।
মেডিটেরানিয়ান শিপিং কম্পানির (এমএসসি) ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আজমীর হোসাইন চৌধুরী বলছেন, এলসি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বাংলাদেশি আমদানিকারক বিদেশি সরবরাহকারীর বদলে সরাসরি জাহাজের বিরুদ্ধেই মামলা করে দিয়েছে। এতে ১০৮৪ এক রপ্তানি পণ্য বোঝাই করে জাহাজটি ২০ জুলাই বহির্নোঙরে আটক আছে।
বিদেশি শিপিং কম্পানি এমএসসি’র হেড অব অপারেশন এন্ড লজিস্টিকস আজমীর হোসাইন চৌধুরী বলছেন, কলম্বোগামি রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণে বন্দর কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে; যাতে রপ্তানিকারকরা নির্ধারিত সময়ে বিদেশি ক্রেতার কাছে পণ্য পৌঁছাতে পারেন। ঠিক সেই চ্যালেঞ্জিং সময়ে দেশিয় উৎপাদকদের এতগুলো রপ্তানি পণ্য ৬ দিন ধরে আটক আছে বহির্নোঙরে। এটা তো ভাবাই যায় না। প্রতিদিন জাহাজ অলস বসে থাকার আর্থিক ক্ষতির বোঝা বইতে হচ্ছে আমাদের।
জানা গেছে, ঢাকা কলিমউল্লাহবাদ ফরিদাবাদের শ্যামপুরের আমদানিকারক ‘আরবি কনকাস্ট এন্ড রি রোলিং মিলস প্র্রাইভেট লিমিটেড’ মুলত হাউকোর্টের অ্যাডমিরালিটি স্যুটে এই মামলাটি করেন। মামলায় জাহাজ মালিক, চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান, কাস্টমস কমিশনার থেকে শুরু করে
১৪ জনকে বিবাদি করা হয়েছে। আবেদনকারী ২ কোটি ৬১ লাখ টাকার ক্ষতিপুরণ মামলা করেছেন। মামলায় ৫শ টন স্ক্র্যাপ কেনা নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল চট্টগ্রামের ’এইচ এম স্টিলের’ সাথে ‘আরবি কনকাস্ট এন্ড রি রোলিং মিলস প্র্রাইভেট লিমিটেডের।
অভিযোগ আছে, ‘আরবি কনকাস্ট এন্ড রি রোলিং মিলস প্র্রাইভেট লিমিটেড’ এলসি সংক্রান্ত টাকা পরিশোধের মানি লন্ডারিং জটিলতা এড়াতেই এই মামলা করেছে। আর এই মামলায় কোন কারণ ছাড়াই আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন জাহাজে থাকা রপ্তানি পণ্যের মালিকরা।