চট্টগ্রাম বন্দরের (নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল) এনসিটি টার্মিনালের ১৮ নম্বর কী গ্যান্ট্রি ক্রেন ধাক্কা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগে বন্দর কর্তৃপক্ষ আটক করেছে বিদেশি জাহাজ ‘হানসা রেন্সডবার’। ১৬দিন ধরে বহির্নোঙরে আটকা পড়েছে সেই জাহাজ।
অথচ সেই কী গ্যান্ট্রি ক্রেনটি গতকাল বৃহষ্পতিবার থেকে সচল রয়েছে। সেই ক্রেন দিয়ে জাহাজ থেকে পণ্য উঠানামা চলছে নির্বিঘ্নে। আজ শুক্রবার জেটিতে ভিড়া ‘সিনার সুন্দা’ জাহাজে সেই ক্ষতিগ্রস্ত’ কী গ্যান্ট্রি ক্রেন দিয়ে পণ্য উঠানামা চলছে স্বাভাবিকভাবেই।
এখন প্রশ্ন উঠেছে তাহলে কী গ্যান্ট্রি ক্রেনের কী বিশাল ক্ষতি হয়েছিল? যে জাহাজটি এতদিন ধরে আটকে রাখা হয়েছে। আর ১৬ দিনে ক্রেনের ক্ষতির পরিমান পর্যন্ত নিরূপন করতে পারেনি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এতেই চট্টগ্রাম বন্দরের জাহাজ আটকের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
চট্টগ্রাম-কলম্বো রুটে প্রথমবার ফিডার জাহাজ পরিচালনা করেছে জার্মানভিত্তিক হ্যাপাগ-লয়েড। শিপিং কম্পানিটি এতদিন চট্টগ্রাম থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কন্টেইনার পরিবহন করছিল। কিন্তু এই জাহাজ দিয়েই প্রথম ফিডার সার্ভিস শুরু করে। প্রাথমিকভাবে তিনটি জাহাজ দিয়েই এই সার্ভিস পরিচালনা শুরু হয় গত সেপ্টেম্বরের ২৭ তারিখ থেকে। ২৮ সেপ্টেম্বর প্রথম জাহাজটি ভিড়ে জেটিতে। আর জেটিতে ভিড়তে গিয়েই কী গ্যান্ট্রি ক্রেনকে ধাক্কা দেয় জাহাজটি। তখন জাহাজটি চালাচ্ছিলেন বন্দরের নিজস্ব পাইলট তানভীর।
শিপিং সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেশ কটি কারণে জাহাজটি আটক রহস্যজনক মনে হচ্ছে। একটি হচ্ছে জাহাজটি এনসিটি’র ৪ নম্বর জেটিতে বার্থিং দেয়া ছিল কিন্তু আগে অবহিত করা ছাড়াই ভিড়ানো হয়েছে ৫ নম্বর জেটিতে। আর ক্রেনকে ধাক্কা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত যদি হয় তখন কিন্তু বন্দরের পাইলটই সেই জাহাজ চালাচ্ছিলেন। দুর্ঘটনার জন্য তিনি কিন্তু কোনভাবেই দায় এড়াতে পারেন না। সবচে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, জাহাজটি ক্রেন ক্ষতিগ্রস্ত করলে তার ক্ষতি নিরুপন করতে ১৬ দিন সময় লাগটা রহস্যজনক। এখানে লেনদেনের কোন বিষয় থাকতে পারে।
উল্লেখ্য, বিদেশি জাহাজ ‘হানসা রেন্সডবার’ মালিকের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে চালাচ্ছিল হ্যাপাগ-লয়েড। ফলে জাহাজ আটক হয়া নিয়ে তাদের খুব একটা দায় নেই। কোন তৎপরতাও দেখা যাচ্ছে না। ফলে দ্রুত জাহাজটি ছাড় করার কোন সুফল মিলছে না। এই অবস্থায় দ্রুত জাহাজটি ছাড় করতে পিএন্ডআই ক্লাব হিসেবে কোস্ট টু কোস্টকে নিয়োগ দিয়েছে জাহাজের মালিকপক্ষ। জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির মালিক আলী রেজাকে অনেকবার ফোন করলে তিনি সাড়া দেননি।
অবশ্য ক্ষতির পরিমান নিরুপন কেন দেরি হচ্ছে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বলেছে, কী গ্যান্ট্রি ক্রেনের সরবরহাকারী হচ্ছে চীনের ‘জেডপিএমসি।’এই ক্রেন এখনো নতুন, ওয়ারেন্টি পিরিয়ড শেষ হয়নি। ফলে জেডপিএমসি’র অনুমোদন ছাড়া কোন ক্ষতি নিরূপন করা যাচ্ছে না। আর চীনে সরকারী ছুটি থাকায় তাদের টীম আসতে দেরি হচ্ছে।