বাংলা নিউজ

সুয়েজ খাল ছাড়তে এভার গিভেন জাহাজকে দিতে হবে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা

বিশেষ প্রতিনিধি

এখনই সুয়েজ খাল ছাড়তে পারছে না প্রায় এক সপ্তাহ ধরে খালটি আটকে রাখা আলোচিত দানবাকৃতির জাহাজ এভার গিভেন। ডিগার, ড্রেজার আর টাগবোট ব্যবহার করে জাহাজটিকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে দিয়ে এরইমধ্যে চালু হয়েছে সুয়েজ খাল রুট। তবে মিসরীয় কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, খালটি ছাড়তে হলে জাহাজটিকে এক কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ গুণতে হবে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় আট হাজার ৪৫৭ কোটি ৭০ লাখ ৯০ হাজার টাকা।

জাহাজটির মালিক পক্ষ যতক্ষণ পর্যন্ত এ অর্থ পরিশোধে রাজি না হবেন ততক্ষণ পর্যন্ত এটি মিসরের পানিসীমা ছাড়তে পারবে না বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওসামা রাবি। স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘তদন্ত সম্পন্ন না হওয়ার আগ পর্যন্ত এবং ক্ষতিপূরণ না দেওয়া পর্যন্ত জাহাজটি এখানেই (সুয়েজ খাল) থাকবে। ‌আমরা খুব শিগগিরই একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর ব্যাপারে আশাবাদী। যে মুহুর্তে তারা ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হবে, তখনই জাহাজটিকে চলাচল করতে দেওয়া হবে।‌‌’

ওসামা রাবি জানান, মিসরীয় কর্তৃপক্ষ জাহাজটিকে মুক্ত করার খরচ বাবদ এক বিলিয়ন ডলার দাবি করবে।

বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জাহাজ চলাচলের এই পথটিতে এভার গিভেন নামের ওই জাহাজটি প্রায় সপ্তাহখানেক ধরে আড়াআড়িভাবে আটকে ছিল। গত ২১ মার্চ মিসরের মরুভূমিতে যে ঝড় হয়েছিল সেই ঝড়ের প্রবল বাতাস আর খালের পানিতে জোয়ারের চাপে ৪০০ মিটার দীর্ঘ জাহাজটি তার যাত্রাপথ থেকে সরে যায়। ঘুরে গিয়ে এটি আড়াআড়িভাবে খালের পথ আটকে ফেলে।

প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৫০টি জাহাজ বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত এই নৌপথটি ব্যবহার করে। কিন্তু এই ঘটনার পর সুয়েজ খালের দুই মুখে তৈরি হয় বিশাল যানজট। ফলে এ রুটে চলাচলকারী অন্যান্য জাহাজকে ভিন্ন পথ ব্যবহার করতে হয়।

মিসরের অর্থনীতি সুয়েজ খালের ওপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। করোনা মহামারির আগে দেশটির জিডিপির প্রায় দুই শতাংশ আসতো সুয়েজ খাল থেকে পাওয়া মাশুল থেকে।

সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, খাল বন্ধ থাকায় তাদের প্রতিদিন গড়ে এক কোটি ৫০ লাখ ডলার লোকসান হয়েছে। অন্যদিকে, লয়েডস লিস্টে প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, শত শত পণ্যভর্তি জাহাজ আটকে থাকায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৯৬০ কোটি ডলারের ব্যবসা বন্ধ ছিল।

টাগ-বোট আর ড্রেজার ব্যবহার করেই শেষ পর্যন্ত এভার গিভেনকে মুক্ত করা হয়। এটা ব্যর্থ হলে তৃতীয় একটি উপায়ও বিবেচনার মধ্যে ছিল। তা হলো সব মালামাল ও জ্বালানি তেল সরিয়ে ফেলে জাহাজটিকে হালকা করে ফেলা। তবে শেষ পর্যন্ত ওই বিকল্পের পথে হাঁটতে হয়নি কর্তৃপক্ষকে। টাগ-বোট আর ড্রেজার ব্যবহার করেই জাহাজটিকে পানিতে ভাসাতে সমর্থ হয় তারা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button