বিশেষ প্রতিনিধি,
৪০ ফুট দীর্ঘ খালি কন্টেইনার নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে চরম বিপাকে পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। রপ্তানি পণ্য পাঠানোর সংকট মেটাতে বিদেশ থেকে খালি কন্টেইনার এনে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে শিপিং লাইনগুলো। কিন্তু উল্টো ঘটনা ঘটিয়েছে বিদেশি শিপিং কম্পানি ওরিয়েন্ট ওভারসিজ কন্টেইনার লাইন (ওওসিএল)। কম্পানিটি চট্টগ্রাম বন্দর থেকেই ৩৪০টি ৪০ ফুট দীর্ঘ কন্টেইনার পাঠিয়ে দিচ্ছে। আজ বুধবার ‘এমভি নর্ডটাইগার’ জাহাজে করে সেগুলো বোঝাই করা হচ্ছে; আগামীকাল বৃহষ্পতিবার সকালেই জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়ে যাবে।
জানতে চাইলে কন্টেইনার ডিপো’র এক কর্মকর্তা শিপিং এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘এমভি নর্ডটাইগার’ জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দর ছাড়ার কথা ছিল আজ ২০ জানুয়ারি; হঠাৎ করে শিডিউল পরিবর্তন করে ২১ জানুয়ারি নির্ধারিত হয়। এরইমধ্যে অফডক থেকে ৪০ ফুট দীর্ঘ ৩৪০টি খালি কন্টেইনার পাঠানো হচ্ছে জেটিতে। বোঝাই শেষে সেটি চট্টগ্রাম ছাড়বে।
এর আগে বেশ কিছুদিন ধরে ৪০ ফুট দীর্ঘ খালি কন্টেইনার সংকটের কারণে রপ্তানি পণ্য পাঠানো ব্যাহত হচ্ছিল। কারণ বাংলাদেশ থেকে ৪০ ফুট দীর্ঘ খালি কন্টেইনারেই রপ্তানি জাহাজীকরণ করা হয়। এই অবস্থায় সংকট মেটাতে বিদেশি মেডিটেরানিয়ান শিপিং কম্পানির (এমএসসি) খালি কন্টেইনার এনেই রপ্তানি বুকিং সামাল দিচ্ছে; রপ্তানিকারকদের পণ্য রপ্তানি নির্বিঘ্ন করছে। অথচ উল্টো ঘটনা ঘটেছে ওওসিএলএর ক্ষেত্রে।
জানতে চাইলে বিদেশি শিপিং লাইনের এক কর্মকর্তা শিপিং এক্সপ্রেসকে বলেন, এই মুহুর্তে হয়তো তাদের পর্যাপ্ত রপ্তানি বুকিং নেই। ডিপোতে খালি কন্টেইনার পড়ে আছে। শিপিং লাইনের অন্য বন্দরে বুকিং আছে; সেজন্য সেখানে নিয়ে যাচ্ছে।
তবে তিনি বলছেন, চুক্তি না থাকলে এক লাইনের খালি কন্টেইনার অন্য শিপিং লাইনকে পণ্য পরিবহনের দেয়ার সুযোগ নেই। এজন্যই তারা নিয়ে যাচ্ছে।
শিপিং লাইন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রপ্তানি পণ্য পাঠাতে সপ্তাহে গড়ে ১৬শটি ৪০ ফুট খালি কন্টেইনার প্রয়োজন হয়; কিন্তু আমদানি পণ্য খালি হওয়ার পর আমরা পাই সর্বোচ্চ ৮শটি, বাকি খালি কন্টেইনার বিদেশ থেকেও আনতে পারছি না। সপ্তাহে আনতে পারছি সর্বোচ্চ ২শটি ৪০ ফুট কন্টেইনার। ফলে সংকটটা বড় আকার ধারন করেছে। একটি ৪০ ফুট দীর্ঘ খালি কন্টেইনার কলম্বো বন্দর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে আনতে খরচ হচ্ছে ৫৫০ মার্কিন ডলার। কিন্তু রপ্তানিকারকদের স্বার্থেই আমরা এটা করছি।
এ বিষয়ে জানতে ওরিয়েন্ট ওভারসিজ কন্টেইনার লাইনের ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিনকে ফোন দেয়া হলে তিনি সাড়া না দেয়ায় মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।