রাশিয়ামুখি জাহাজ চলাচল বন্ধ: চট্টগ্রামে আটকা পড়েছে ১১৬ রপ্তানি কন্টেইনার

রাশিয়ামুখি জাহাজ কম্পানিগুলো পণ্য বুকিং নেওয়া বন্ধ ঘোষণা করায় চট্টগ্রামের বেসরকারি ১৯টি কনটেইনার ডিপোতে রাশিয়াগামী রপ্তানি পণ্যের বেশ কিছু চালান আটকে গেছে। গতকাল রবিবার পর্যন্ত ৯টি কন্টেইনার ডিপোতে ১৬৬ রপ্তানি পণ্যভর্তি কনটেইনার আটকে ছিল। এসব চালান বুকিং বন্ধ ঘোষণার আগেই ডিপোতে নেওয়া হয়েছিল। আবার কনটেইনারে বোঝাই হয়নি এমন পণ্যও ডিপোর ইয়ার্ডে রয়েছে। জাহাজ চলাচল বন্ধের ঘোষনায় এসব কন্টেইনার আর ডিপো থেকে জাহাজে উঠানাে সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশ কনটেইনার ডিপো মালিকদের সংগঠন বিকডার মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার বলেন, জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণার আগে যেসব রপ্তানি চালান কন্টেইনার ডিপোতে আনা হয়, সেগুলোই মূলত আটকে আছে। নতুন করে বুকিং না থাকায় আর কেনা রাশিয়ার রপ্তানি পণ্য ডিপোতে আসছে না। সেগুলো কারখানাই থাকবে।
রাশিয়ার তৈরি পোশাক মার্কেটের সঙ্গে কাজ করা একাধিক উদ্যোক্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সিএমএ-সিজিএম, মায়ের্কস লাইন, এমএসসি, ওয়ান লাইনের মতো শিপিং লাইন রাশিয়ামুখী জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। ডিএইচএল, ফেডেক্সের মতো আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিস রাশিয়ামুখী ডকুমেন্ট গ্রহণ করছে না।
মেডিটেরানিয়ান শিপিং কম্পানি (এমএসসি) হেড অব অপারেশনস এন্ড লজিস্টিকস আজমীর হোসাইন চৌধুরী বলেন, যুদ্ধের কারণে ২৪ ফেব্রয়ারি থেকে ইউক্রেনমুখি এবং ১ মার্চ থেকে রাশিয়ামুখি সব কন্টেইনার জাহাজ চলাচল বন্ধ রেখেছি আমরা। ১ মার্চের পর এই দুদেশে নতুন করে কােন রপ্তানি পণ্যের বুকিং নিচ্ছি না। বাংলাদেশ থেকে ৩ মার্চ কয়েকটি রপ্তানি পণ্যের কন্টেইনার জাহাজীকরন করা হয়।
ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দরে বিভিন্ন দেশের বেশকিছু রপ্তানি পণ্য আটকা পড়েছিল সেগুলো আমরা সৌদি আরবের কিংস আবদুল্লাহ বন্দরে জমা রাখা হচ্ছে। যুদ্ধ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সেই বন্দর থেকেই রাশিয়া-ইউক্রেন নেয়া হবে।
জানা গেছে, স্বাভাবিক সময়ে চট্টগ্রাম থেকে সিঙ্গাপুর অথবা কলম্বোর বন্দর হয়ে ও ইউরোপের বন্দর ঘুরে রাশিয়ায় পণ্য নেওয়া হয়। আবার ইউরোপের বন্দরে নামানোর পর সড়কপথেও পণ্য রাশিয়ায় যায়। রাশিয়ায় পণ্য নিতে না পেরে এখন ইউরোপ ও আশপাশের দেশগুলোতে নেওয়ার বিকল্প চেষ্টা শুরু হয়েছে।
চট্টগ্রামের ঘোসাইলডাঙ্গার সনেট টেক্সটাইল লিমিটেডের একটি চালান গত সপ্তাহে জাহাজীকরণে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক গাজী মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, আপাতত পোল্যান্ডে চালানটি নেওয়া হচ্ছে। ক্রেতা প্রতিষ্ঠান উৎপাদন সচল রাখতে পরামর্শ দিচ্ছে।অবশ্য যতই নিশ্চয়তা দেওয়া হোক, রপ্তানিকারকদের দুশ্চিন্তা কাটছে না।