মোংলায় ভিড়বে গিয়ারলেস ভেসেল

বিশেষ প্রতিনিধি
মোংলা বন্দরের জেটিতে মোবাইল হারবার ক্রেন স্থাপন করা হয়েছে। ক্রেন স্থাপন করার পর এখন মোংলা বন্দরের জেটিতে গিয়ারলেস বা ক্রেনবিহীন জাহাজ ভিড়ানোর সুবিধা ঘোষণা করেছে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের এই বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বন্দরটি জানিয়েছে, এতদিন শুধু ক্রেনযুক্ত জাহাজ ভিড়তে পারতো বন্দর জেটিতে। জাহাজের ক্রেন দিয়ে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হতো। গত জুন–জুলাই মাসে বন্দর কর্তৃপক্ষ দুই ধাপে পাঁচটি ক্রেন সংগ্রহ করে। এসব ক্রেন সংগ্রহে বন্দরের খরচ হয়েছে ১২০ কোটি টাকা।
মোংলা বন্দর এক সার্কুলারে জানায়, বন্দরের সংগ্রহে এখন চারটি মোবাইল হারবার ক্রেন এবং দুটি মাল্টিপারপাস ক্রেন রয়েছে। এতে ১২ সারি পর্যন্ত কনটেইনার এসব ক্রেন দিয়ে হ্যান্ডলিং করা যাবে। বন্দরের পরিচালক মোস্তফা কামালের সই করা এই সার্কুলার জারি হয় সম্প্রতি।
দেশে যে দুটি বন্দর দিয়ে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয় তার একটি মোংলা বন্দর। আরেকটি চট্টগ্রাম বন্দর। চট্টগ্রাম বন্দরে বহু আগে থেকেই গিয়ারলেস ভেসেল ভিড়ানো হচ্ছে। গিয়ারলেস ভেসেলে তুলনামূলক বেশি কনটেইনার পরিবহন করা যায়। মোংলায় জাহাজের ড্রাফট কম থাকায় এখন গিয়ারলেস ভেসেলে আগের চেয়ে বেশি কনটেইনার হ্যান্ডলিং করার সুযোগ হবে।
মোংলা বন্দরে এখন দুটি শিপিং কোম্পানির কনটেইনার জাহাজ পরিষেবা চালু আছে। বন্দরটি দিয়ে কনটেইনারে মূলত আমদানি পণ্য আনা হয়। আর রপ্তানি কম। গত অর্থবছরে মোংলা বন্দর দিয়ে প্রায় ৪৪ হাজার কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়। এ সময়ে জাহাজ আসা–যাওয়া করেছে ৫১টি। ২০১৯–২০ অর্থবছরে ৬৩ টি জাহাজ থেকে কনটেইনা হ্যান্ডলিং হয়েছিল ৫৯ হাজার ৪৭৬টি। অর্থ্যাৎ প্রতি মাসে চার থেকে পাঁচটি কন্টেইনার জাহাজ বন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহন করে।
করোনার কারণে গত অর্থবছরে বন্দর দিয়ে কনটেইনার হ্যান্ডলিং কমেছে। চট্টগ্রামের তুলনায় বন্দরকেন্দ্রিক সুযোগ–সুবিধা কম থাকায় এই বন্দর দিয়ে কনটেইনার হ্যান্ডলিং বাড়ছে না।
মোংলা বন্দরের পরিচালক মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, গিয়ারলেস ভেসেল বার্থিংয়ের সুবিধার কারণে এই বন্দর দিয়ে কনটেইনার হ্যান্ডলিং বাড়বে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পাবলিক–প্রাইভেট পার্টনারশীপ বা পিপিপি মডেলে বন্দরে দুটি জেটির নির্মাণকাজ চলছে। এই দুটি জেটির নির্মাণকাজ শেষ হলে বন্দর দিয়ে কন্টেইনার হান্ডলিং বাড়বে। আবার পদ্মা সেতু চালু হলে বন্দর ব্যবহারে ব্যবসায়ীরা আরও আগ্রহী হবেন। গিয়ারলেস ভেসেলের সুবিধা তখন আরও বেশি পাওয়া যাবে।
বন্দর ব্যবহারকারীরা জানান, মোংলা বন্দরে যত সুযোগ–সুবিধা বাড়ানো হবে ততই চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর চাপ কমবে। এজন্য বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি–রপ্তানিতে নানা সুযোগ সুবিধা বাড়াতে হবে।