বাংলা নিউজ

মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে বিনিয়োগ ভারতের

দেশের দ্বিতীয় প্রধান মোংলা সমুদ্রবন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর দিকে নজর দিয়েছে ভারত। পদ্মাসেতু চালুর পর ঢাকার সাথে মোংলার দুরত্ব অনেক কমে আসায় মোংলা বন্দরের গ্রহনেযাগ্যতা বেড়েছে। এই অবস্থায় একটি প্রকল্পের মাধ্যমে এই বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর দিকে নজর দিয়েছে ভারত। এ নিয়ে ২৬ ডিসেম্বর একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে দুই দেশ।

ক্রমবর্ধমান চাহিদা মোকাবেলায় মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ‘আপগ্রেডেশন মোংলা বন্দর প্রকল্প’ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৬,০১৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অর্থ ১,৫৫৫ কোটি এবং প্রকল্প সহায়তা ৪,৪৫৯ টাকা। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল ১ জানুয়ারি ২০২০ থেকে ৩০ জুলাই ২০২৪। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং ভারতের লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি) আওতায় ইজিস ইন্ডিয়া কনসাল্টিং ইঞ্জিনিয়ার্স প্রাইভেট লিমিটেড। আপগ্রেডেশন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ, কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং ইয়ার্ড নির্মাণ, কন্টেইনার ডেলিভারি ইয়ার্ড নির্মাণ, নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ সংরক্ষিত এলাকা সম্প্রসারণ, সার্ভিস ভেসেল জেটি নির্মাণ, ৮টি জলযান সংগ্রহ, বন্দর আবাসিক কমপ্লেক্স এবং কমিউনিটি সুবিধা নির্মাণ, বন্দর ভবন এবং মেকানিকেল ওয়ার্কশপ সম্প্রসারণ, স্লিপওয়ে এবং যন্ত্রপাতিসহ মেরিন ওয়ার্কশপ কমপ্লেক্স নির্মাণ, দিগরাজে রেলক্রসিং ওভারপাস নির্মাণ, মোংলা বন্দরের বিদ্যমান সড়ক ৬ লেনে সম্প্রসারণ, বহুতল কার ইয়ার্ড নির্মাণ ইত্যাদি।

প্রকল্পটির কাজ বাস্তবায়িত হলে মোংলা বন্দর বছরে ১,৮০০টি জাহাজ, ১ কোটি ৫০ লাখ মেট্রিক টন কার্গো, ৪ লাখ টিইইউস কন্টেইনার, ১০ হাজার গাড়ি হ্যান্ডলিং করতে পারবে। এতে মোংলা বন্দরের বার্ষিক আয় ১৫০ কোটি টাকা এবং কাস্টমস ও অন্যান্য সংস্থার আয় ৩ হাজার কোটি টাকা বাড়বে।

সেই অনুষ্ঠানে নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছিলেন, মোংলা বন্দরের আপগ্রেডেশন হলে তা চট্টগ্রামের বিকল্প হয়ে উঠবে। এটি চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতার কাছাকাছি চলে যাবে। এর মাধ্যমে শুধু বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশী দেশগুলোর ব্যবসা-বাণিজ্যেরও প্রসার ঘটবে, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। মাল্টিমোডাল কানেক্টিভিটির মাধ্যমে মোংলা বন্দর এগিয়ে যাবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, পশুর নদীর আউটারবারে ড্রেজিং করার ফলে হারবাড়িয়া পর্যন্ত সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ আসতে পারে। ইনারবারে ড্রেজিং কার্যক্রম চলছে, যাতে বন্দর জেটিতে সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ আসতে পারে।
মোংলা বন্দরের চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। বন্দরের আপগ্রেডেশন প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরামর্শক সংক্রান্ত চুক্তিপত্রে সই করেন মোংলা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা ও ইজিস ইন্ডিয়া কনসাল্টিং ইঞ্জিনিয়ার্স প্রাইভেট লিমিটেড গ্রুপের সিইও লরেন্ট জার্মেইন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button