নিজস্ব প্রতিবেদক
মাত্র ১০দিনে চীনের সাংহাই বন্দর থেকে কন্টেইনার পণ্য চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য পৌঁছে দিচ্ছে মায়ের্সক গ্রুপের সহযোগি সংস্থা সীল্যান্ড শিপিং। আর চীনের আরেক বন্দর নিমবো থেকে চট্টগ্রামে পণ্য পৌঁছতে সময় নিচ্ছে মাত্র ১১দিন। চীন থেকে আসার পথে মাঝখানে মালয়েশিয়ার তানজুম পেলিপাস বন্দরেও ট্রানজিটের জন্য থামবে জাহাজটি। এরপরও অত্যন্ত দ্রুত সময়ে পণ্য পৌঁছার সুযোগ করে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিযোগি অন্য শিপিং লাইনগুলো যেখানে এই দুরত্বে পণ্য পৌঁছাতে ১৪ থেকে ২১দিন সময় নিচ্ছে সেখানে তাদের সার্ভিসটি সবচে দ্রুততর।
জানতে চাইলে মায়ের্সক লাইনের শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে শিপিং এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘এই রুটে প্রতিযোগি অন্য লাইনগুলো চীন থেকে আসার পথে মাঝপথে কমপক্ষে দুটি বন্দর ট্রানজিট নিচ্ছে; আর সময় নিচ্ছে ১৪ থেকে ২১ দিন। আমরা সেখানে নিচ্ছি মাত্র ১০ দিন। আমাদের সার্ভিসটি সবচে দ্রুতগতির এবং নিরাপদও। গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনা করেই এই সার্ভিস দেয়া হচ্ছে। ভাড়াও কিন্তু খুব বেশি নয়।’
তিনি বলছেন, চীন থেকে সপ্তাহে দুটি জাহাজ ভিড়ছে চট্টগ্রাম বন্দরে। একটি সার্ভিস স্বাভাবিক নিয়মে রাখা আছে; চাইলে তারা তুলনামূলক কম ভাড়া দিয়ে সেই সার্ভিসের সুবিধাও নিতে পারে।
শিপিং ব্যবসা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চীন থেকে বর্তমানে তিনটি কম্পানির কন্টেইনার জাহাজ সার্ভিস চালু আছে। এরমধ্যে মায়ের্সক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান সী ল্যান্ড ৫টি জাহাজ দিয়ে পণ্য পরিবহন করছে। সী ল্যান্ড গ্রুপ নিমবো বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে একদিনে সাংহাই বন্দরে পৌঁছবে; সেখান থেকে পণ্য নিয়ে মালয়েশিয়ার তানজুম পেলিপাস বন্দর পৌঁছতে লাগবে ৬দিন; সেখান থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছতে লাগবে ৪দিন। তাদের সার্ভিসটির নাম সাংহাই-১।
চীন থেকে বর্তমানে হুন্দাই-সিনোকর গ্রুপ চালাচ্ছে ৫টি জাহাজ। তারাও চীনের নিমবো বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে সাংহাই বন্দরে পৌঁছবে একদিনে। এরপর সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছতে লাগছে ১১দিন। চীন থেকে কসকো শিপিং চালাচ্ছে ৩টি জাহাজ দিয়ে কন্টেইনার পরিবহন করছে। কিন্তু তারা নিমবো ও সাংহাই বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে না। তারা আসে ইয়াংপো বন্দর থেকে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম-চীন সমুদ্রপথে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে কন্টেইনার সার্ভিস চালু করে সিঙ্গাপুরভিত্তিক পিআইএল কম্পানি। চালুর পর কনটেইনার পরিবহন বেড়ে যাওয়ায় জাহাজ সংখ্যা পাঁচটিতে উন্নীত করা হয়। সার্ভিস চালু হওয়ায় ১৩ থেকে ১৫ দিনে পণ্য দেশে পৌঁছছে। চীন থেকে সার্ভিস চালু হওয়ায় এই খরচ প্রতি কনটেইনারে কমপক্ষে ১৫০ থেকে ২০০ ডলার সাশ্রয় হয়। কিন্তু ফিরতি পথে রপ্তানি কনটেইনার সংকটে পড়ে সার্ভিসটির প্রথমে জাহাজ সংখ্যা কমানো হয়। চালুর সাত মাসের মাথায় লোকসানে পড়ে এই রুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পিআইএলের সার্ভিসের পাশাপাশি ২০১২ সালের অক্টোবর মাসে মায়ের্সক লাইন এই রুটে কনটেইনার জাহাজ চলাচল শুরু করে। ‘সাংহাই সার্ভিস’ নাম দিয়ে সপ্তাহে চারটি জাহাজ দিয়ে পণ্য পরিবহন শুরু হলেও চালুর সাত মাসের মাথায় জাহাজের সংখ্যা একটিতে নেমে আসে। পরে অবশ্য তারাও রুট পরিবর্তন করে সার্ভিসটি চালু রেখেছে।