মাতারবাড়ীতে আটমাসে চট্টগ্রাম বন্দরের আয় এক কোটি ২৫ লাখ টাকা

বিশেষ প্রতিনিধি,
মাতারবাড়ী কয়লাবিদ্যুত কেন্দ্রের নির্মানসামগ্রী সমুদ্রপথে পরিবহনের জন্য গত ডিসেম্বেরই চালু হয়েছে একটি জেটি। নিজেদের প্রয়োজনে জেটিটি নির্মান করেছে জাপানী বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মান কর্তৃপক্ষ। এরইমধ্যে গত জুলাই মাসে চালু হয়েছে আরো একটি জেটির অর্ধেক অংশ। জুলাই থেকে সেই দুটি জেটিতে নির্মান সামগ্রী বোঝাই জাহাজ ভিড়িয়েই চট্টগ্রাম বন্দর গত আটমাসে আয় করেছে এক কোটি ২৫ লাখ টাকা।
২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে জুলাই পর্যন্ত এই আটমাসে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ মোট ২০টি পণ্য বোঝাই জাহাজ জেটিতে ভিড়িয়েছে। সবগুলো জাহাজই সরাসির এসেছে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, জাপান থেকে ভিড়েছে বিদু্যত কেন্দ্রের জন্য নির্মিত জেটিতে। এসব জেটিতে জাহাজ ভিড়ানো, চ্যানেল দিয়ে প্রবেশ এবং মুরিং সহ অন্যখাত থেকে এই রাজস্ব আয় করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃূপক্ষ। কিন্তু নিয়মানুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ মুল রাজস্ব আয় করবে গভীর সমুদ্রবন্দর থেকে; যেটি নির্মানকাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৫ সালে।
চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম. শাহজাহান বলছেন, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর আমরাএখনো নির্মানকাজ শুরু করিনি; কিন্তু তার আগেই সেখানে নির্মিত বিদ্যুত কেন্দ্রের জেটিতে জাহাজ ভিড়িয়ে আমরা রাজস্ব আদায় শুরু করেছি। রাজস্ব আদায় শুরুর আগে আমরা মাতারবাড়ী সাগরে বয়া স্থাপন করেছি, নেভিগেশনাল চ্যানেল দিয়ে জাহাজ চলাচল নিরবচ্ছিন্ন করেছি, পাইলট নিয়োগ করেছি। একইসাথে পণ্য উঠানামার যাবতীয় ফ্যাসিলিটিজ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি।
তিনি বলছেন, ২০টি জাহাজ জেটিত ভিড়িয়ে আমরা গত ডিসেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত এক কোটি ২৫ লাখ টাকা আয় করেছি। এরমধ্যে শুধুৃ জেটি ভাড়া বাবদই আমরা পেয়েছি ৫০ লাখ টাকার মতো। আমরা আশা করিছ এখন যেহেতু দুটি জেটি হয়েছে; বিদ্যুত কেন্দ্রের নির্মান সামগ্রীর জাহাজ আসাও বেড়ে যাবে। তখন রাজস্ব আয় আরো বেশি হবে।
মাতারবাড়ী কয়লাবিদ্যুত কেন্দ্রের জন্য নির্মিত জেটিতে গত ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ভিড়তে শুরু করেছে বিদ্যুত কেন্দ্রের পণ্য বোঝাই জাহাজ। তখন প্রথ জাহাজটি ছিল ভেনাস ট্রায়াম্প। গত ১৫ জুলাই নতুন নির্মিত দ্বিতীয় এই জেটিতে ভিড়তে শুরু করেছে আরো একটি জাহাজ। অর্থ্যাৎ এখন একসাথে দুটি জাহাজ ভিড়তে পারবে সেখানে।
জানা গেছে, কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মিত হবে ২০২৫ সালে। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচে বড় জাহাজ ভিড়বে সেই জেটিতে। কিন্তু তার আগেই জেটিতে প্রবেশের জন্য প্রস্তুত হয়েছে আড়াইশ মিটার প্রস্থ, ১৬ মিটার গভীরতা এবং ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যানেল। এই চ্যানেল বা প্রবেশথ দিয়েই বঙ্গোপসাগর থেকে জাহাজ বন্দর জেটিতে প্রবেশ করবে। গভীর সাগর থেকে জাহাজগুলো চ্যানেল দিয়ে জেটিতে প্রবেশের জন্য বসানো হয়েছে পথ নির্দেশক ছয়টি বয়। জাহাজ প্রবেশের চ্যানেলের একপাশে নির্মিত হচ্ছে তিনটি জেটি; যেগুলো ব্যবহৃত হবে বিদ্যুত কেন্দ্রের নির্মান সামগ্রী উঠানামার কাজে। আর অপরপাশেই গড়ে উঠবে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর।