বাংলা নিউজ

বে টার্মিনালের জন্য ৮৭৩ একর ভূমি পেল চট্টগ্রাম বন্দর

আগামীর সমুদ্রবন্দর ‘বে টার্মিনাল’ নির্মানের জন্য দুই দফায় ৮৭৩ একর জমি বরাদ্দের চুড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। প্রথম দফায় ৬৮ একর; পরের দফায় ৮০৩ একক জমি পেল। ফলে টার্মিনাল নির্মানে ভূমি জটিলতা নিয়ে আর কোন সমস্যা নেই। এখন শুধু নির্মান শুরুর অপেক্ষা। যদিও এই জমি পেতে ৭ বছর লেগেছে চট্টগ্রাম বন্দরের।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পতেঙ্গা সমুদ্র উপকূলজুড়ে গড়ে উঠা বে টার্মিনাল তিনটি ধাপে নির্মিত হবে। এরমধ্যে একটি টার্মিনাল (মাল্টিপারপাস) নির্মাণ করবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বাকি দুটি টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) মাধ্যমে বরাদ্দ দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী প্রকল্পের অগ্রগতি সরেজমিনে দেখতে আজ শুক্রবার বে টার্মিনাল এলাকা পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস।

সেখানে সরেজমিন প্রকল্প এলাকার মাটি ভরাট কাজ দেখে তিনি উচ্ছ্বসিত হন এবং চট্টগ্রাম বন্দরের প্রশংসা করেন। উপস্থিত সবাইকে তিনি বলেন, আমি বুঝতেই পারিনি এত অগ্রগতি হয়েছে কাজের।  ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বপ্ন দেখেছেন বলেই বে টার্মিনাল বাস্তবায়ন হচ্ছে। রিং রোড বাস্তবায়নসহ বেশ কিছু উন্নয়নের ফলে পুরো এলাকার চিত্র পাল্টে গেছে। এ রকম বড় বড় স্বপ্ন আগে কখনো কেউ দেখেনি।

উল্লেখ্য, দক্ষিণ কাট্টলী রাসমনিঘাট থেকে চট্টগ্রাম ইপিজেডের পেছনে সাগর পাড়ে সাড়ে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় গড়ে উঠবে এই বে টার্মিনাল। ২ হাজার ৫০০ একর ভূমিতে গড়ে উঠতে যাওয়া এই টার্মিনালের প্রথম দফায় ৬৮ একর ভূমি বরাদ্দ পাওয়ার পর দ্বিতীয় দফায় আরো ৮০৩ একর বরাদ্দ পাচ্ছে। জোয়ার-ভাটা, দিন-রাত, বাঁকা চ্যানেল কিংবা ড্রাফটের বিবেচনা কর্ণফুলী নদীর জেটিতে ভিড়লেও বে-টার্মিনালের ক্ষেত্রে সেই সীমাবদ্ধতা নেই। বর্তমানে কর্ণফুলী নদীর জেটিতে পৌছাতে একটি জাহাজকে ১৫ কিলোমিটার ভেতরে প্রবেশ করতে হয়। কিন্তু বে টার্মিনাল নির্মাণ করা হলে তা শূন্য কিলোমিটারের মধ্যেই বার্থিং করতে পারবে। বে টার্মিনাল নির্মাণ হলে যেকোনো দৈর্ঘ্য ও প্রায় ১২ মিটার ড্রাফটের জাহাজ এখানে ভিড়তে পারবে। এখানে ২৪ ঘণ্টা জাহাজ পরিচালনা করা যাবে। বিদ্যমান পোর্ট জেটিতে একসাথে ১৬টি জাহাজ বার্থিং করা গেলেও বে টার্মিনালে গড়ে প্রায় ৫০টি জাহাজ একইসাথে বার্থিং করা যাবে। এজন্য এই টার্মিনালকে আগামীর বন্দর বলা হচ্ছে।

নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী গত ১৯ আগস্ট ‘বে টার্মিনাল প্রকল্প’ এলাকা পরিদর্শন শেষে ২০২৪ সালে তা চালুর ঘোষনা দেন। এর আগে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যার রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহানও একই আশাবাদের কথা বলেন।
বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, বে টার্মিনালের পরামর্শক নিয়োগের জন্য ছয়টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দিয়েছে। এই ছয়টি প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবনা যাচাই বাছাই শেষে আমরা আগামী নভেম্বরের মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দিতে পারব বলে আশা করছি।
বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, বে টার্মিনাল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প। এটি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আমরা পেয়েছি। এখন দ্রুততম সময়ে কনসালট্যান্ট নিয়োগ করে আমরা প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাব।

প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনের পর বে টার্মিনালের হাইড্রোগ্রাফিক তথ্য, জমি অধিগ্রহণ ও ডিটেইল ডিজাইন তুলে ধরেন বন্দরের চিফ হাইড্রোগ্রাফার কমান্ডার এম আরিফুর রহমান, উপ-ব্যবস্থাপক (ভূমি) জিল্লুর রহমান ও নির্বাহী প্রকৌশলী রাফিউল আলম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button