Portsবাংলা নিউজ

বিশ্বজুড়ে কনজেনশন ফি, মুক্ত চট্টগ্রাম বন্দর

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশ্বজুড়ে সব গন্তব্যে কন্টেইনার পরিবহনের ভাড়া বাড়ছে গত নভেম্বর থেকে। জাহাজ ও কন্টেইনার জট বাড়তে থাকায় এবার এই অতিরিক্ত ভাড়ার সঙ্গে যোগ হয়েছে কনজেশন ফি। গার্মেন্ট শিল্পে বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনামকেও গুণতে হচ্ছে এই ফি। তবে শিপিং কোম্পানিগুলো এই তালিকায় রাখেনি চট্টগ্রাম বন্দরকে। কারণ চট্টগ্রাম বন্দরে এখন কোনো জট নেই।
কয়েক বছর আগেও চট্টগ্রাম বন্দরে ভয়াবহ জটের কারণে সারচার্জের নামে অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হয়েছে আমদানিকারকদের। রপ্তানিতে এ দেশের রপ্তানিকারকেরা না গুণলেও বিদেশি ক্রেতাদের পরিশোধ করতে হয়েছে সারচার্জ। এখন উল্টো চিত্র কনটেইনার পরিবহন খাতে।
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সবকটি শিপিং কোম্পানি সারচার্জ ও কনজেশন ফির নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় শুরু করেছে। মূলত গত মাস থেকে ধাপে ধাপে এই অতিরক্তি ভাড়া আদায় শুরু হয়। সর্বশেষ বিশ্বের এক নম্বর শিপিং কোম্পানি মায়েসক কয়েকটি গন্তব্যে কনজেশন ফি কার্যকর করার ঘোষণা দিয়েছে।
শিপিং কোম্পানি মায়েসকের ঘোষণা অনুযায়ী, তিউনিশিয়ার দুটি বন্দর থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে কনটেইনার আনা–নেওয়ায় এই অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হবে। এসব গন্তব্যের মধ্যে আছে ভিয়েতনাম, চীন, তাইওয়ানের মতো দেশ। প্রতি ২০ ফুট লম্বা কন্টেইনারে ২০০ ডলার এবং ৪০ ফুট লম্বা কন্টেইনারের জন্য এই হার ৪০০ ডলার।
চট্টগ্রাম বন্দরের পরিবহন বিভাগের পরিচালক এনামুল করিম শিপিং এক্সপ্রেসকে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে জট না থাকায় কোনো শিপিং কোম্পানি চট্টগ্রাম থেকে কনজেনশন ফি আরোপ করেনি। বিশ্বের বিভিন্ন বন্দরে জট থাকায় সেসব বন্দরে এখন কনজেশন ফি আরোপ করা হয়েছে। বিশেষ করে ভিয়েতনামে কনজেশন ফি আরোপ করার অর্থ হলো তাদের রপ্তানিতে ব্যয় বেড়েছে, যেটি আমাদের বাড়েনি।
প্রতিমাসে দেশ থেকে গড়ে ৫৫ হাজার কনটেইনার রপ্তানি হয়। এ হিসেবে ২০০ ডলার করে ধরা হলে রপ্তানিতে প্রতি মাসে কোটি ডলারের অতিরিক্ত বোঝা থেকে বেঁচে গেছে বাংলাদেশ। যদিও এখানে কনজেশন ফি বা সারচার্জ আরোপ করা হলে তা বিদেশি ক্রেতাদের দিতে হবে। এফওবি পদ্ধতিতে রপ্তানি পণ্য পরিবহন হওয়ায় মূল বিদেশি ক্রেতারাই পরিশোধ করতে হচ্ছে।
ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বলেন, বিশ্বের অনেক বন্দর থেকে কন্টেইনার পরিবহনে যেখানে সারচার্জ আরোপ করা হয়েছে সেখানে চট্টগ্রাম বন্দরের নাম না থাকা সুখবরই বটে। করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়তে থাকায় বিশ্বে এখন বন্দরগুলোতে জট চলছে। জট না থাকায় চট্টগ্রাম বন্দর সেখানে মাথা উঁচু করে আছে–এটা খুবই গৌরবের। তবে এই অর্জন ধরে রাখতে হবে। নতুন প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। তাহলে এই বন্দর বড় জটের সমস্যায় পড়বে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button