বাংলা নিউজ

বিপদজনক পণ্য ব্যবস্থাপনায় ‌’কমপিটেন্ট অথরিটি’ হচ্ছে

কন্টেইনার ডিপোতে বিপদজনক পণ্য ব্যবস্থাপনার জন্য কমপিটেন্ট অথরিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়। এতদিন চট্টগ্রাম বন্দরের ভিতর বিপদজনক পণ্য তদারকি থাকলে বেসরকারী কন্টেইনার ডিপোতে এর কোন বালাই ছিল না। এরফলে ডিপোগুলো সাধারন পণ্য, রপ্তানি পণ্য এবং বিপদজনক পণ্য পৃথক নিরাপত্তা মোড়কে রাখতো না। সীতাকুন্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরনে নজিরবিহীন প্রাণহানির পর এই অনিয়মের বিষয়টি নজরে আসে। এরপর থেকেই মুলত এমন উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রনালয়।
জানতে চাইলে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল বলেন, বিপদজনক পণ্য ব্যবস্থাপনার জন্য কমপিটেন্ট অথরিটি গঠনের বিষয়ে অগ্রগতি হচ্ছে। এ সংক্রান্ত বিষয়ে কার্যপত্র তৈরি করতে নৌপরিবহন অধিদপ্তরকে বলা হয়েছে। বিএম কন্টেইনার ডিপোতে বিস্ফােরনেপর এমন অনিয়মের বিষয়টি নজরে আসে তদন্ত সংস্থার। এরপরই আমরা সমাধানে এমন উদ্যোগ নিয়েছি।

জানাা গেছে, আন্তর্জাতিক নৌ সংস্থার (আইএমও) কনভেনশনে অনুস্বাক্ষর করলে তা মানা যেকোনো দেশের জন্য বাধ্যতামূলক। সাগরে জীবনের নিরাপত্তাবিষয়ক সোলাস (সেফটি অব লাইফ অ্যাট সি) কনভেনশনের আওতায় বিপজ্জনক পণ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ‘ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম ডেঞ্জারাস গুডস বা আইএমডিজি কোড’ আছে। ২০০৪ সাল থেকে এ কোডের নিয়মকানুন মানা বাধ্যতামূলক। এ কোডের আওতায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হয় ২০১০ সাল থেকে। এ কোডের আওতায় নয়টি ক্যাটাগরির পণ্যের একটি তালিকা রয়েছে। তাতে রাসায়নিক, বিস্ফোরক, বিপজ্জনক গ্যাস, দাহ্য তরল ও কঠিন পদার্থ, বিষাক্ত, তেজস্ক্রিয়, জারণ পদার্থসহ আরও অনেক পণ্য রয়েছে। সাধারণত অন্য পদার্থের সংস্পর্শে এলে এসব পণ্য স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ক্ষতির কারণ হতে পারে। সে জন্য এসব বিপজ্জনক পণ্য পরিবহন থেকে শুরু করে সংরক্ষণে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তার নীতিমালা আছে আইএমডিজি কোডে।
গত ৪ জুন বিএম কন্টেইনার ডিপোর ভয়াবহ বিস্ফোরেনর প্রায় পাঁচ বছর আগেই বিপদজনক পণ্য ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আন্তর্জাতিক নৌ সংস্থা বলেছিল, বিপদজনক পণ্য ব্যবস্থাপনা যথাযথভাবে মানছে না বাংলাদেশ। এরপর শুধু চিঠি চালাচালি আর আলোচনা সভা করে কেটে গেছে দীর্ঘ সময়।
এ বিষয়ে অগ্রগতি জানতে চাইলে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর আবু জাফর মো. জালাল উদ্দিন বলেন, আগামী সপ্তাহে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে একটি সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে। এরপর কমিটি গঠন করেই আমরা বাস্তবায়নের দিকে যাবো।
এদিকে নৌ মন্ত্রণালয়ের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিপিং বিশেষজ্ঞ জানান, যারা এই কমিটি গঠন করবেন তাদের কমপেটেন্সি নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে। ডিজি শিপিং ও উক্ত দুর্ঘটনার দায় এড়াতে পারে না। জবাবদিহিতা অভাব রয়েছে বলে তারা পার পেয়ে যাচ্ছেন। অন্য কোন দেশে হলে এত প্রাণহানির জন্য তাদেরও বিচারের আওতায় আনা হতো। শিপিং সম্বন্ধে ন্যূনতম জ্ঞান না থাকা সত্ত্বেও এই সমস্ত পদে অপেশাদার ব্যক্তিদের বসিয়ে শিপিং সেক্টরের ধ্বংস ডেকে আনছে যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের নতুন জাহাজ হারানো ও বেসরকারি কন্টেইনার ডিপো অব্যবস্থাপনায় ব্যাপক প্রাণহানি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button