বিএম ডিপোতে অক্ষত আমদানি-রপ্তানি পণ্যভর্তি ১৫শ কন্টেইনার

আমদানি, রপ্তানিকারক এবং ডিপো মালিক ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিলে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অক্ষত কন্টেইনারের সংখ্যা সাড়ে ১৫শ একক। আগুন লাগার পর কাস্টমস, ডিপো মালিকদের পক্ষ থেকে কন্টেইনার গণনার পর প্রাথমিকভাবে এই তথ্য মিলেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত ডিপোতে পণ্যভর্তি ১ হাজার ৫৫০ টিইইউস পণ্য অক্ষত পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৮৫০ একক টিইইউ রপ্তানিপণ্য এবং ৭০০ একক আমদানিপণ্য ভর্তি কনটেইনার রয়েছে। এসব কনটেইনারে তৈরি পোশাক, নিটওয়্যার, অ্যাগ্রো প্রসেস ফুডসহ নানা রপ্তানি পণ্য রয়েছে। আবার আমদানি পণ্যের মধ্যেও খাদ্যসামগ্রীসহ নানা কাঁচামালসহ রয়েছে প্যাকেজিং সামগ্রী।
আগুন লাগার পর কাস্টমসের নির্দেশে বিএম কন্টেইনার ডিপোর কার্যক্রম বন্ধ থাকায় এখন সেই কন্টেইনার সরানোর কোন সুযোগ নেই। আর কাস্টমস বলছে, তদন্ত রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত এসব কন্টেইনার জাহাজীকরণ বা ছাড় করার কোন সুযোগ নেই। কারণ সেখানে দীর্ঘ প্রক্রিয়া এবং পদ্ধতিগত জটিলতা আছে।
তবে ডিপোতে থাকা রপ্তানি পণ্যের মালিকরা চাইছেন এসব কন্টেইনার দ্রুত জাহাজীকরন হোক। বাংলাদেশের নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ চট্টগ্রামের পরিচালক গাজী মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলছেন, রপ্তানিপণ্যগুলো নিয়ে দুশ্চিন্তা সবচে বেশি। কনটেইনারগুলো শুধু অক্ষত থাকলেই হবে না। যেহেতু অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। কনটেইনারগুলোতে ধোঁয়া ঢুকলে বায়াররা (আমদানিকারক) পণ্য নেবে না। এজন্য প্রতিটি কনটেইনার আবার কারখানায় নিয়ে পণ্য চেক করতে হবে।
তিনি বলেন, ডিপোতে পণ্য হস্তান্তর করার পর আবার চাইলেও পণ্য ফেরত নেওয়া সহজ নয়। এক্ষেত্রেও কিছু প্রসিডিউর রয়েছে। সবমিলিয়ে কাস্টমস, শিপিং এজেন্ট, ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ- সবাইকে নিয়ে ত্রিপক্ষীয়, চতুর্পক্ষীয় মিটিং চলছে। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যাচ্ছে না।
জানা গেছে, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বিএম কনটেইনার ডিপোতে রপ্তানির পোশাক বাদেও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যসহ আরও নানা পণ্য ছিল। দেশের খ্যাতনামা ও শীর্ষস্থানীয় খাদ্যপণ্য রপ্তানিকারী প্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের রপ্তানিপণ্যও ছিল। ৪ জুন রাতে অগ্নিকাণ্ডের আগে বিভিন্ন দেশে রপ্তানির লক্ষ্যে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ৩৫ লাখ ১১ হাজার ৭৩৪ ডলার মূল্যমানের ২ লাখ ১৯ হাজার ২০৪ কার্টন পণ্য বিএম ডিপোতে পাঠানো হয়েছিল।
এ বিষয়ে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক (এক্সপোর্ট) মিজানুর রহমান বলেন, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বিএম ডিপোতে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের রপ্তানিপণ্য ভর্তি ১০০ এর কাছাকাছি কনটেইনার ছিল। যেগুলো অগ্নিকাণ্ডের আগে শিপমেন্টের জন্য পাঠানো হয়। অনেকগুলো কনটেইনার শিপমেন্টের অপেক্ষায় ছিল।
তিনি বলেন, আগুনে পোড়েনি এমন অনেক কনটেইনারও সেখানে রয়েছে। এখন আমাদের কী পরিমাণ কনটেইনার অক্ষত রয়েছে, সেটা জানা খুবই জরুরি। যেসব কনটেইনার অক্ষত রয়েছে, সেগুলোর প্রতিটি খুলে দেখতে হবে, পণ্যের বর্তমান অবস্থা জানতে হবে। যে পণ্যগুলোর মান ভালো রয়েছে কিংবা রপ্তানি উপযোগী রয়েছে, সেগুলো দ্রুত শিপমেন্ট করা যেতো। কিন্তু ডিপোতে সব ধরনের অপারেশন (কার্যক্রম) বন্ধ থাকায় আমরা বিপাকে পড়েছি। আমরা এরই মধ্যে কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে চিঠিও দিয়েছি।