প্রায় ৫ মাস পর সেই বিএম কন্টেইনার ডিপো থেকে রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণ প্রক্রিয়া হচ্ছে। গত ৪ জুন ভয়াবহ বিস্ফোরনে ৫১ জন নিহতের পর বিএম ডিপোর আমদানি, রপ্তানি, খালি কন্টেইনার রাখার সব কাজ বন্ধ ছিল।এ ঘটনায় আহত হন দুই শতাধিক। ডিপোর একাংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। দুর্ঘটনায় রপ্তানি পণ্যবাহী ১৫৪ কনটেইনার এবং আমদানি পণ্যবাহী দুটি কনটেইনার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
গত আগস্ট মাসে কাস্টমসের অনুমতির পর খালি কন্টেইনার রাখার কাজ শুরু করেছিল সেই ডিপো। গত সোমবার রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণ প্রস্তুতির অনুমতি দিল চট্টগ্রাম কাস্টমস। কিন্তু ডিপোর পুরো অবকাঠামো নির্মান শেষ হয়নি, আর নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতি হয়নি; কাস্টমসের কারণ দর্শানোর সদুত্তর না পাওয়ার আগেই কাস্টমস কেন অনুমতি দিল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস যে অনুমতি দিয়েছে তাতে বলা আছে, তিন মাসের জন্য কেবল রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণ প্রস্তুতির কাজ করতে পারবে বিএম ডিপো। রাসায়নিক পণ্য, বিপদজনক পণ্য রাখতে পারবে না এই ডিপো। আর রপ্তানি পণ্য রাখার জন্য কিছু শর্ত বেঁধে দিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার ফাইজুর রহমান বলেন, শর্ত বেঁধে দিয়ে তিনমাসের জন্য শুধু রপ্তানি কন্টেইনার জাহাজীকরণ প্রস্তুতির অনুমতি দিয়েছি। অন্য পণ্য রাখার সুযোগ নেই ডিপোতে।
জানা গেছে, দুর্ঘটনার পর এ মাসে ডিপো কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ আগস্ট শুধু খালি কনটেইনার ওঠানো–নামানো ও সংরক্ষণের অনুমতি দেয় কাস্টমস। অনুমতিপত্রে দুটি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। এই শর্তের একটি হলো পরিবেশ অধিদপ্তর, বিস্ফোরক অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র ১৫ দিনের মধ্যে নিতে হবে। আরেকটি হলো ১৫ দিনের মধ্যে কাছাকাছি কোনো অগ্নিনির্বাপণ কার্যালয় বা ফায়ার স্টেশনের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করতে হবে।
এবার রপ্তানি পণ্য রাখার অনুমতির ক্ষেত্রে নয় শর্ত দিয়েছে কাস্টমস।
চট্টগ্রাম বন্দর ও বেসরকারি কনটেইনার ডিপো সমিতির তথ্য অনুযায়ী, কার্যক্রম শুরুর পর সোমবার পর্যন্ত বিএম ডিপোতে ১ হাজার ৩৭৩ একক খালি কনটেইনার ওঠানো–নামানো হয়েছে। ২০১১ সালে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের দুটি প্রতিষ্ঠানের ১৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগে বিএম ডিপো চালু হয়। এই ডিপোর চেয়ারম্যান নেদারল্যান্ডসের নাগরিক রবার্ট প্রঙ্ক। ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে আছেন মোস্তাফিজুর রহমান। পরিচালক হিসেবে আছেন স্মার্ট জিনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান।