বিশেষ প্রতিনিধি
পণ্যভর্তি এফসিএল (ফুল কন্টেইনার লোড) কন্টেইনার জটে পড়ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম বন্দর ইয়ার্ডে পণ্যভর্তি কন্টেইনার এনে দীর্ঘদিন ফেলে রাখার ফলে এই জট তৈরী হচ্ছে। এই অবস্থা নিরসনে এবার বেশ আগেভাগেই তৎপর হয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। উদ্দেশ্য রমজানের আগে জাহাজ ভিড়া, পণ্য উঠানামা এবং সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা।
এজন্য এফসিএল কন্টেইনার সরাতে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি নোটিশ দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ ; অবস্থার উন্নতি না হলে ১ মার্চ থেকে নির্ধারিত মাশুলের ওপর বাড়তি জরিমানা হিসেবে আদায় করবে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম বলছেন, আমদানি বাড়ছে, কন্টেইনার জাহাজ বাড়ছে, রমজানও আসছে। ফলে আগেভাগে প্রস্তুতি হিসেবেই আমরা সবাইকে সতর্ক করছি। দ্রুত পণ্য ছাড় না নেয়ার জন্য।
বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, চট্টগ্রাম বন্দরের সবগুলো ইয়ার্ড মিলে ৪৯ হাজার একক কন্টেইনার রাখার সক্ষমতা রয়েছে। বৃহষ্পতিবার পর্যন্ত ইয়ার্ডে কন্টেইনার ছিল ৪০ হাজার একক। মুলত জাহাজ থেকে যে পরিমান কন্টেইনার নামছে, সেই গতিতে বন্দর থেকে ছাড় না নেয়ায় কন্টেইনার জট লেগেছে। বন্দর এই মুহুর্তে কমার্শিয়াল এবং ভোগ্যপণ্যের প্রচুর আইটেম একইসাথে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কন্টেইনারে বিভিন্ন ধরনের ফল জমে আছে।
বন্দরের হিসাবে, দ্রুত ছাড় নেয়ার নোটিশ দেয়ার পর কন্টেইনার ছাড়ের পরিমান কিছুটা বেড়েছে কিন্তু তা হতাশাব্যঞ্জক। নোটিশ দেয়ার আগের দিন গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বন্দর থেকে ছাড় হয়েছে ৪ হাজার ৭৬০ একক কন্টেইনার, আর ২৫ ফেব্রুয়ারি ছাড় হয়েছে ৪ হাজার ৯৬২ একক কন্টেইনার। বন্দর থেকে কন্টেইনার ডেলিভারি নেয়ার হার ভালো থাকে সোমবার থেকে বৃহষ্পতিবার। শুক্রবার, শনিবার, রবিবার কন্টেইনার ছাড়ের হার একেবারেই কম থাকে। ফলে গত দুদিনে খুব একটা ডেলিভারি হবে না।
কেন পণ্য ছাড় নিচ্ছেন না জানতে চাইলে আমদানিকারক রেজাউল করিম বলছেন, শুক্র, শনি ও রবিবার পণ্যছাড় একেবারেই কম থাকার কারণ হচ্ছে শুক্র ও শনিবার ব্যাংক কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ থাকে। সেইসাথে কাস্টমস শুক্রবার পণ্যের এক্সামিন করে না। আর শিপিং লাইন এবং শিপিং এজেন্ট-সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা বন্ধ থাকে দুদিন। ফলে আমি চাইলে পণ্য দ্রুত ছাড় নিতে পারি না। বন্দর একা খোলা থাকলে তো হবে না, বন্দর ব্যবহারকারী গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরগুলো সচল না থাকলে একসাথে টিউন না করলে ডেলিভারি ব্যবস্থার উন্নতি হবে না।