পাশ্ববর্তী দেশের রিজিওনাল হাব হয়ে উঠছে চট্টগ্রাম বন্দর

নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, রিজিওনাল বা আঞ্চলিক বন্দর হয়ে উঠছে দেশের প্রধান চট্টগ্রাম বন্দর। পাশ্ববর্তী দেশগুলোর জন্য ব্যবহারের মাধ্যমেই এই সুযোগ তৈরী হচ্ছে। একদিকে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মিত হচ্ছে; বে টার্মিনালের প্রথম ধাপ নির্মিত হবে; সেইসাথে মাতারবাড়ীতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মিত হচ্ছে। সবমিলিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর তো বিশাল আকার ধারন করছে। ফলে আশপাশের যেকোন দেশ এই বন্দর ব্যবহার করতে পারবে।
আজ রবিবার চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ট্রানজিট চুক্তি অনুসারে ভারতের জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করতে পারবে এবং সেখান থেকে সড়ক পথে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মালামাল নিয়ে যেতে পারবে। এজন্য চট্টগ্রাম বন্দরে ভারতের জাহাজের ট্রায়াল রান (পরীক্ষামূলক চলাচল) হয়েছে। আরো ট্রায়াল হবে।
সেই বাড়তি জাহাজের চাপ সামাল দেয়ার জন্য পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল, ওভারফ্লো ইয়ার্ড নির্মিত হয়েছে। চাপ সামাল দেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর প্রস্তুত আছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে প্রজ্ঞাপন হয়ে গেলে নিয়মিতভাবে ভারতীয় জাহাজ পন্য নিয়ে আসা শুরু করবে।
ভারতের জাহাজের চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করা এবং সেখান থেকে পণ্য ভারতের অন্যান্য রাজ্যে পাঠানোর বিষয়ে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন। এর নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের প্রত্যেকটি গেইটে স্ক্যানার বসানোর কার্যক্রম চলমান আছে। চট্টগ্রাম বন্দরে যাতে স্ক্যানার বসানো না হয়; এখানে যাতে ডিজিটাল বাংলাদেশের ছোঁয়া না লাগে সেজন্য সংঘবদ্ধ চক্র জোরালো ভূমিকা রাখছে। চট্টগ্রাম বন্দরকে বিশ্বমানের ডিজিটাল করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যা যা করণীয় তা করা হবে। শুধু চট্টগ্রাম বন্দর নয়, মোংলা বন্দরসহ স্থলবন্দরগুলোতেও স্ক্যানার বসানোর কাজ চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের নীতিগত একটা সিদ্ধান্ত আছে পিসিটি পরিচালনায় পিপিপি মডেলে যাব। সেজন্য অনেকগুলো দেশের প্রস্তাবনা আছে। সৌদি আরব, দুবাই, ডেনমার্ক, ভারতসহ অনেকের প্রস্তাবনা আছে। তাদের প্রস্তাবগুলো পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপ (পিপিপি) কর্তৃপক্ষের কাছে আছে।
ফ্রেইট ফরোয়ার্ডারদের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, লজিস্টিক সাপোর্ট রাইট টাইমে রাইট প্লেসে থাকলে সাকসেস নিশ্চিত। পোর্ট, শিপিং এর সঙ্গে ডোর টু ডোর সার্ভিস দরকার। পোর্ট সঠিক ভূমিকা না রাখলে সব স্টেকহোল্ডার সাফার করবে। করোনাকালে চট্টগ্রাম বন্দর চব্বিশ ঘণ্টা সাত দিন চালু ছিল। আমরা বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বাফা থেকে শুরু করে ট্রাক, ট্রেইলার চালক এবং পুলিশ প্রশাসন সবার সহযোগিতা পেয়েছি। আমরা সমন্বয় করেছি শুধু। এরফলেই চট্টগ্রাম বন্দরের এই অর্জন সম্ভব হয়েছে।
এরপর নৌ মন্ত্রী বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার এসোসিয়েশন আয়োজিত সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টে দক্ষতা বাড়ানো বিষয়ক এক সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন। সেখানে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের পরিকল্পিত উন্নয়ন করে যাচ্ছেন বলেই আজ বাংলাদেশের এই বিশাল অগ্রগতি হচ্ছে। বাংলাদেশ এখন শুধু বিশে^র রোল মডেলই নয়; এগিয়ে যাওয়ার টার্ণিং পয়েন্ট।
উদ্বোধনী বক্তব্য দেন ফিড দ্য ফিউচার বাংলাদেশ ট্রেড অ্যাকটিভিটির চিফ অব পার্টি মার্ক শাইম্যান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের প্রফেসর ড. মো. মামুন হাবিব ও চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. ইমন কল্যাণ চৌধুরী। আলোচনা করেন বাফার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিরুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন বাফার সভাপতি কবির আহমেদ।