বিশেষ প্রতিনিধি
বেতন-ভাতাসহ ১১ দফা দাবি আদায়ে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত নৌ যান শ্রমিকদের ধর্মঘট শুরু হয়েছে।বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের আওতাধীন আটটি সংগঠন এ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।গত শনিবার দিনগত রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে এই ধর্মঘট শুরু হয়; চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্নস্থানে নদীপথে পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত ছোট জাহাজগুলো চলাচল বন্ধ রয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের ভিতর জেটিতে উঠানামা এবং বন্দরে জাহাজ চলাচল এবং বন্দর থেকে পণ্য পরিবহনে কোন সমস্যা নেই। তবে বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে পণ্য নামানো বা লাইটারিং কাজ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। বহির্নোঙরে আমদানি পণ্য নিয়ে আসা বড় জাহাজ থেকে পণ্য ছোট জাহাজে নামিয়ে দেশের বিভিন্নপ্রান্তে নৌ রুটে ছোট জাহাজে পণ্য পরিবহন হয়ে থাকে কিন্তু ধর্মঘটের কারণে সেটি পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
বহির্নোঙরে পণ্য নামানোর জন্য ছোট জাহাজ বুকিং দিয়ে থাকে ‘ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল’। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহি প্রধান মাহবুব রশীদ খান শিপিং এক্সপ্রেসকে বলেন, রাত ১২টা থেকে বহির্নােঙরে বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে পণ্য নামানোর কাজ বন্ধ রয়েছে।সকালে উপকূল থেকে কোন জাহাজ বহির্নোঙরে ছেড়ে যায়নি। আগে থেকে বুকিং নেয়া লাইটার জাহাজগুলো অলস বসে আছে।
ধর্মঘটের বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা নৌ শ্রমিক অধিকার সংরক্ষণ ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি মো. নবী আলম শিপিং এক্সপ্রেসকে বলেন, ১১ দফা দাবি আদায়ে এ ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়। দাবিগুলো নিয়ে গত সোমবার বৈঠক করা হলে কোন সমাধান না আসায় আমরা ধর্মঘট শুরু করেছি। শ্রমিক ফেডারেশনের ১১ দফা দাবির মধ্যে অন্যতম হলো, বাল্কহেডসহ সব নৌযান ও নৌপথে চাঁদাবাজি-ডাকাতি বন্ধ করা। ২০১৬ সালে ঘোষিত গেজেট অনুযায়ী নৌযানের সর্বস্তরের শ্রমিকদের বেতন প্রদান। ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস এবং মালিক কর্তৃক খাদ্যভাতা প্রদান। সব নৌযান শ্রমিকের সমুদ্র ও রাত্রিকালীন ভাতা নির্ধারণ। এনডোর্স, ইনচার্জ, টেকনিক্যাল ভাতা পুনর্নির্ধারণ। কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ। প্রত্যেক নৌ শ্রমিককে মালিক কর্তৃক নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক প্রদান। নদীর নাব্য রক্ষা ও প্রয়োজনীয় মার্কা, বয়া ও বাতি স্থাপন।নৌপরিবহন অধিদফতরে সব ধরনের অনিয়ম ও শ্রমিক হয়রানি বন্ধ করা।
এর আগে শনিবার শ্রমিক ধর্মঘট প্রত্যাহার ও তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে বৈঠকে বসে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। সংস্থাটির চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেকের সভাপতিত্বে এতে নৌ-পরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক কমডোর আবু জাফর মো. জালাল উদ্দিন ও শ্রমিক নেতারা অংশ নেন। সভায় নৌযান মালিকদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও তারা অংশ নেননি ফলে সমাধান মিলেনি।