দ্বিগুন শ্রমিক ও সর্বোচ্চ জাহাজ দিয়ে বহির্নোঙরে অচলাবস্থা কাটানোর উদ্যােগ

বিশেষ প্রতিনিধি-
চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পুরোদমে শুরু হয়েছে পণ্য খালাস। বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে পণ্য স্থানান্তর বা লাইটারিংয়ের ধুম পড়েছে।একসাথে দেড়শটি জাহাজে চলছে পণ্য নামানোর কাজ। মুলত নৌ যান শ্রমিকদের ধর্মঘট এবং বৈরি আবহাওয়ার ফলে চারদিনের অচলাবস্থা কাটিয়ে এখন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে বহির্নোঙর।পণ্য পরিবহনে আর্থিক ক্ষতির বোঝা কাটাতে বাড়তি জাহাজ দিয়ে অত্যন্ত দ্রুততার সাথে পণ্য নামানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
বন্দরের বহির্নোঙরে বছরে আমদানিকৃত প্রায় সাড়ে চার কোটি টন পণ্য স্থানান্তর হয়; সেগুলো ছোট জাহাজে নদীপথে দেশের বিভিন্নস্থানে পরিবহন করা হয়। বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে পণ্য স্থানান্তর কাজটি করে থাকে শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর। জানতে চাইলে শীপ হ্যান্ডলিং ও বার্থ অপারেটর ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি একেএম শামসুজ্জামান রাসেল বলছেন, বহির্নোঙরে একটি জাহাজ একদিন বাড়তি বসে থাকার জন্য ৮ থেকে ১০ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানা গুনতে হয় আমদানিকারককে। ৫ দিনের অচলাবস্থা কাটাতে আমরা এখন সর্বোচ্চ লাইটার জাহাজ এবং সর্বোচ্চ পরিমান শ্রমিক নিয়োজিত করেছি।
তিনি বলছেন, একটি বড় জাহাজ থেকে পণ্য নামাতে আমরা ২টি গ্যাং বা শ্রমিক দল বুকিং দিতাম। এখন তার দ্বিগুন অর্থ্যৎ চারটি গ্যাং বুকিং দিচ্ছি; যাতে দ্রুত পণ্য নামানো সম্ভব হয়। আমদানিকারকের ক্ষতির বোঝা কাটাতে সক্ষম হয়। এরপর ধকল কাটিয়ে বহির্নোঙরে পণ্য নামানো স্বাভাবিক হতে এক সপ্তাহ সময় লাগবে। কারণ আজ পর্যন্ত ৫২টি বড় জাহাজে ১২ লাখ টন আমদানি পণ্য রয়েছে।
জানা গেছে, গত সোমবার রাত থেকে বহির্নোঙরে নৌ যান ধর্মঘট শুরু হয় চলে বৃহষ্পতিবার পর্যন্ত।ধর্মঘট প্রত্যাহার হলেও চার নম্বর সতর্ক সংকেত এবং সমুদ্র উত্তাল থাকায় বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে পণ্য স্থানান্তর বা লাইটারিং কাজ শুরু হয়নি। সতর্ক সংকেত কমানোর পর সাগর স্বাভাবিক হলে গত শনিবার সন্ধ্যা থেকে লাইটার জাহাজ চলাচল শুরু হয়। গত রবিবার থেকে লাইটার জাহাজ বরাদ্দ দেয়া শুরু করে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল। ধর্মঘট এবং বৈরি আবহায়ার কারণ বহির্নোঙরে বড় জাহাজে থাকা ১০ লাখ টন পণ্য খালাস আটকে যায় এবং সাগর থেকে নদীপথে গন্তব্যে রওনা দেয়ার পর মাঝপথে বিভিন্ন ঘাটে আটকা পড়েছে ১১ লাখ ৯০ হাজার টন। সবমিলিয়ে ২১ লাখ টন পণ্য আটকা পড়েছিল। সেগুলো এখন বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে স্থানান্তরের কাজ চলছে।
জানতে চাইলে ছোট বা লাইটার জাহাজ বুকিং প্রদানকারী সংস্থা ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের নির্বাহী পরিচালক মাহবুব রশীদ খান শিপিং এক্সপ্রেসকে বলেন, স্বাভাবিক সময়ে আমরা দিনে ৩০টি লাইটার জাহাজ বুকিং দিই; কিন্তু পাঁচদিনের অচলাবস্থার ধকল কাটাতে সব আমদানিকারক দ্রুত পণ্য লাইটার করতে চাইছেন। একইসাথে আর্থিক ক্ষতির বোঝা কমিয়ে আনতে বাড়তি জাহাজ বুকিং দিচ্ছেন।গত রবিবার আমরা ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলে বরাদ্দ দিয়েছি ৪৮টি জাহাজ; সোমবার দিয়েছি ৬৭টি এবং আজকে বরাদ্দ আরো বাড়বে বলে মনে করছি।
তিনি বলছেন, আমাদের কাছে প্রচুর লাইটার জাহাজ আছে; আমদানিকারক যত চাইছেন ততই বরাদ্দ দিচ্ছি।