বিশেষ প্রতিনিধি
খোরাকি ভাতা দেয়ার ঘোষনা দেয়ার পর নৌ যান শ্রমিকদের টানা তিনদিনের ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ বৃহষ্পতিবার বিকাল থেকে বাংলাদেশ সচিবালয়ে ধর্মঘটকারী শ্রমিক নেতৃবৃন্দ এবং জাহাজ মালিকদের সাথে বৈঠকের পর সন্ধ্যা সোয়া ছয়টায় আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা আসলো। এরপর থেকে কাজ শুরুর আশা করছেন সংশ্লিষ্ট সবাই।
বৈঠকে নৌ যান শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষনা দেন। বৈঠকে সরকারের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন শ্রম মন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান।
সোমবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে ধর্মঘট শুরুর পর সমাধানে কার্যকরী কোন পদক্ষেপ না আসায় ধর্মঘট দীর্ঘায়িত হওয়ার শঙ্কা করছিলেন ব্যবসায়ীরা। এই উদ্বিগ্ন পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্যােগে জাহাজ মালিক, ধর্মঘট পালনকারী শ্রমিক, বন্দর ব্যবহারকারী, পরিবহন ব্যবসায়ী, চেম্বারসহ সব ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়। একইসাথে বৃহষ্পতিবার ঢাকায় বৈঠক ডাকা হয় সচিবালয়ে।
জানা গেছে, ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে বহির্নোঙরে ৫৪টি বিদেশি জাহাজে ১০ লাখ টন পণ্য আটকা পড়েছে। এর বাইরে সাগর ও নদীপথে গন্তব্যে রওনা দেয়ার পর মাঝপথে বিভিন্ন ঘাটে আটকা পড়েছে ১১ লাখ ৯০ হাজার টন। সবমিলিয়ে ২১ লাখ টন পণ্য আটকা পড়েছে।
এসব জাহাজে গম, ভুট্টা ও ছোলা আছে সাড়ে ৪ লাখ টন; পশুখাদ্য আছে দেড় লাখ টন এবং বাকিটা পাথর, কয়লা এবং সিমেন্ট তৈরীর কাঁচামাল রয়েছে। জাহাজ থেকে নামিয়ে এসব পণ্য বহির্নোঙর থেকে চট্টগ্রাম বন্দর, কর্ণফুলী নদীর ১৬টি ঘাট এবং বহির্নোঙর থেকে ছোট জাহাজে সরাসরি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত সরবরাহ নেয়ার কথা ছিল। সোমবার রাত ১২টা থেকে ধর্মঘটের কারণে বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে (লাইটারিং) পণ্য স্থানান্তর কাজ পুরোপুরি বন্ধ থাকায় বহির্নোঙরে অচলাবস্থা চলছে।
উল্লেখ্য, নৌপথে চাঁদাবাজি-ডাকাতি বন্ধ করা; ২০১৬ সালে ঘোষিত গেজেট অনুযায়ী নৌযান শ্রমিকদের বেতন প্রদান নিশ্চিত করা; ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস এবং মালিক কর্তৃক খাদ্যভাতা প্রদান। কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ এবং নৌ শ্রমিককে মালিক কর্তৃক নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক প্রদানসহ ১১ দফা দাবি আদায়ে সোমবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে ধর্মঘট ডেকেছিল বাংলাদেশ নৌ যান শ্রমিক ফেডারেশন।