চট্টগ্রামে নৌ প্রতিমন্ত্রী: বিগত উপদেষ্টা কমিটির আলোচিত প্রায় সমস্যা সমাধান হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি,
নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বন্দর উপদেষ্টা কমিটির সভা নিয়মিত হওয়া দরকার। এর মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরের ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন সম্পর্কে জানা যায়। বন্দরকে গতিশীল করতে এবং সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া যায়। ২০১৮ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর এটি আমাদের দ্বিতীয় সভা। গত সভায় আলোচিত প্রায় সমস্যা চট্টগ্রাম বন্দর ইতোমধ্যে সমাধান করতে সক্ষম হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর উপদেষ্টা কমিটির ১৪তম বার্ষিক সাধারণ সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদ কর্মীর এক প্রশ্নের জবাবে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী এই মন্তব্য করেন। এর আগে গতকাল রবিবার সকালে বন্দরের শহীদ মো. ফজলুল রহমান মুন্সী অডিটোরিয়ামে উপদেষ্টা কমিটির সভায় প্রধান অতিথিও ছিলেন তিনি।
সেই সভার শুরুতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারিতে চট্টগ্রাম বন্দর সচল রাখায় যারা অবদান রেখেছেন তাদের কথা স্মরন করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তাদের নাম চট্টগ্রাম বন্দরের ইতিহাসে লেখা থাকবে। আপনারা নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। আপনারা বন্দর সচল রাখায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। বিশেষ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
তিনি বলেন, সাংবাদিকরা চট্টগ্রাম বন্দরের সার্বিক উন্নয়নে, দেশের সুনাম মর্যাদা রক্ষার জন্য অসামান্য ভূমিকা রেখেছেন উল্লেখ কওে মন্ত্রী বলেন, আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। বাংলাদেশে একটা সময় ছিল নেতিবাচক সংবাদই বড় সংবাদ। বাংলাদেশ এখন সে জায়গায় নেই। এদেশের মানুষ, পাঠক নেতিবাচক সংবাদে বেশি দৃষ্টি দেয় না।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নদী, সমুদ্র এবং চট্টগ্রাম বন্দরভিত্তিক সরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরির নিয়োগে উপক’লীয় জনগোষ্ঠিকে প্রাধান্য দেয়া হবে; বিনা অভিজ্ঞতায় কাউকে প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়া হবে না। আর অদক্ষ কাউকে চট্টগ্রাম বন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব দেয়া হবে না। কারণ চট্টগ্রাম বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করে এবং দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। সেখানে প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ নিজস্ব টাকায় পদ্মা সেতু করছে। পারমাণবিক ক্লাবে যুক্ত হয়েছি আমরা। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মিত হচ্ছে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল হচ্ছে। আগে দেশে মহাসড়ক ছিল না, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে হয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল কত কিছু হচ্ছে। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) জাফর আলমের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী, সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদ, নারী সংসদ সদস্য ওয়াশিকা আয়শা খান, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ, কাস্টম হাউস কমিশনার মো. ফখরুল আলম, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম. জহিরুল আলম দোভাষ, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুস সালাম, সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চট্টগ্রাম চেম্বার সহ-সভাপতি তরফদার মো. রুহুল আমিন, চট্টগ্রাম সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সাধারন সম্পাদক আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বিকডার সভাপতি নুরুল কাইয়ুম খান, বিজিএমইএর নাসির উদ্দিন চৌধুরী, বাফার পরিচালক খায়রুল আলম সুজন ও চট্টগ্রাম বন্দরের সকল স্টেকহোল্ডার।
এছাড়াও জুম অ্যাপে সভায় অংশ নেন বিকেএমইএ’র মো. হাতেম, মো. সিদ্দিকুর রহমান, রেজাউল করিম, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক রফিক আহমেদ প্রমুখ।
জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দর উপদেষ্টা কমিটির সভা নিয়মানুযায়ী প্রতি তিন মাসে একবার করে আয়োজন করার কথা থাকলেও সেটি মানা হচ্ছে না। সর্বশেষ কমিটির সভা হয়েছিল গত বছরের সেপ্টেম্বরে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ১৪তম সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী কভিড-১৯-এ আক্রান্ত হওয়ায় তা স্থগিত হয়ে যায়। গতকাল ১৫ মাস পর অনুষ্ঠিত হয় এই সভা।