গভীর নয়; শুধু সমুদ্রবন্দর হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে পায়রা বন্দরকে

বিশেষ প্রতিনিধি
পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ, বিপুল ব্যয়ে স্টাডি এবং খননকাজ শেষে পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মান প্রকল্প থেকে সরে এসেছে সরকার। এখন থেকে পায়রা কেবল সমুদ্রবন্দর হিসেবেই গড়ে তুলবে সরকার; যেখানে সর্বোচ্চ ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ ভিড়তে পারবে; যা চট্টগ্রাম বন্দরের মতোই। এজন্য রাবনাবাদ চ্যানেলে বিশাল ব্যয়ে বড় ধরনের খননকাজ শুরু হচ্ছে। সেটি সফলভাবে শেষ হলে আগামী ২০২২ সালে প্রথমধাপে চালুর লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে।
নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী একটি গণমাধ্যমকে সাক্ষাতকারে সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেছেন, গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা থেকে সরে এসে, সেখানে সাধারণ সমুদ্রবন্দর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর এ জন্য বন্দরটির অবস্থান সমুদ্রের ভেতর থেকে সরিয়ে ৬৫ কিলোমিটার দূরে উপকূলবর্তী রাবনাবাদ চ্যানেলের মুখে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এপ্রিল মাসের শেষ নাগাদ কিংবা আগামী মাসের শুরুতে সরকার সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) ক্যাপিটাল ড্রেজিং এবং মেইনটেনেন্স ড্রেজিং পরিচালনায় বেলজিয়ান প্রতিষ্ঠান জান ডি নুলে’র সঙ্গে পাঁচ হাজার কোটি টাকার নতুন চুক্তি স্বাক্ষর করবে। প্রকল্পের রূপরেখা পরিবর্তনের সাথে সরকার এখন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের জন্য নবগঠিত অবকাঠামোগত উন্নয়ন তহবিল থেকে ঋণ প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে। ১৪ মাসের ভেতর খনন বা ড্রেজিং সমাপ্ত হওয়ার লক্ষমাত্রা রয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, ২০২২ সালের মধ্যে পায়রা বন্দর মাল্টিপারপাস টার্মিনালসহ পূর্ণাঙ্গভাবে খুলে দেওয়া হবে, আগামী ২০৩৫ সালের মধ্যে বন্দরটি সকল ব্যয় পুনরুদ্ধারে সক্ষম হবে অর্থাৎ ব্রেকইভেন পর্যায়ে পৌঁছাবে। আমরা মাতারবাড়ী থেকে লাইটারেজ জাহাজ ব্যবহারের মাধ্যমে চট্টগ্রাম, পায়রা ও মংলা বন্দর ব্যবহার করতে পারব।”
জানা গেছে, কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে ১২০০ ওয়াট কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের পাশাপাশি জাপানের ঋণের সাহায্যে দেশের প্রথম ও একমাত্র গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্প নির্মাণাধীন রয়েছে। ২০২৫ সাল নাগাদ গভীর সমুদ্রববন্দর চালুর লক্ষমাত্রা ঠিক করেছে সরকার।
এদিকে পায়রা সমুন্দ্রবন্দরকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মান করছে সরকার। কয়লাভিত্তিক শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র ছাড়াও থাকছে কয়লা টার্মিনাল, রেলপথ, ব্রিজ, সড়কপথ এবং নগরায়ন পরিকল্পনা। সম্প্রতি সরকার আন্ধারমানিক নদীর উপর চারশো কোটি টাকা ব্যয়ে ছয় লেনের ব্রিজ নির্মাণে টেন্ডার জারি করে। এক কিলোমিটার দীর্ঘ এই ব্রিজটি বন্দরের সাথে সড়কপথকে সরাসরি সংযুক্ত করবে।