বিশেষ প্রতিনিধি
কভিড-১৯ মহামারির ব্যাপক ধকল কাটিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য উঠানামা পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। অনেক ক্ষেত্রে কভিড পূর্ব সময়ের চেয়ে ভালো অবস্থানে ফিরেছে পণ্য উঠানামা। দেশে কভিড ধাক্কা শুরু হয় ২০২০ সালের মার্চ মাসে; সেই মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য উঠানামা হয়েছিল ৩৬৬টি জাহাজে। জানুয়ারিতে এসে বন্দর জেটিতে জাহাজ ভিড়েছে ৩৬৮টি। ডিসেম্বরে ভিড়েছিল আরো বেশি ৩৭২টি জাহাজ।
শুধু তাই-নয়, পণ্য উঠানামা নতুন রেকর্ড ছুঁয়েছে। মার্চ মাসে পণ্য উঠানামা হয়েছিল ২ লাখ ৪৯ হাজার একক কন্টেইনার। আর ২০২১ সালের জানুয়ারিতে কন্টেইনার উঠানামা হয়েছে ২ লাখ ৮০ হাজার একক। এই চিত্র থেকেই বোঝা যায়, কভিড ধাক্কা পুরোপুরি কাটিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে চট্টগ্রাম বন্দর।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, মুলত দেশে কভিড যখন বাড়ছিল ঠিক সেই সময়ে স্বাস্থ্যসুরক্ষা মেনে শিল্প-কারখানা চালুর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চ্যালেঞ্জিং সিদ্ধান্তের সুফল হচ্ছে বন্দরের পণ্য উঠানামা স্বাভাবিক হওয়া। তখন সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করলে আজকের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানে সম্ভব হতো না।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম বলছেন, ধীরে ধীরে কভিডের ধাক্কা কাটিয়ে আমরা অর্থনীতির মুল স্রোতে ফিরছি। দেশের অর্থনীতির চাকা সচল হওয়ার কারনেই বন্দরের পণ্য উঠানামা আগের অবস্থায় ফিরেছে। কারণ বন্দর তো কভিড সময়েও পুরোপুরি সচল-গতিশীল ছিল; এক মুহুর্তের জন্য বন্দর বন্ধ ছিল না। আমদানি-রপ্তানি বেড়ে যাওয়ায় বন্দরের পণ্য উঠানামায় রেকর্ড হচ্ছে।
বন্দরের হিসাবে, ২০২১ সালে কন্টেইনার উঠানামা হয়েছে ২ লাখ ৮০ হাজার একক; যা গত এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। কভিড ধাক্কা শুরুর আগে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার উঠানামা হয়েছিল ২ লাখ ৪১ হাজার একক; এরপর থেকে সেটি কমে আসছিল। এপ্রিলে সর্বনিম্ন কন্টেইনার উঠানামা হয়েছিল ১ লাখ ৩২ হাজার একক।কলকারখানা চালুর পর কন্টেইনার উঠানামা ধারাবাহিকভাবে বাড়তে বাড়তে সর্বশেষ ২০২১ সালের জানুয়ারিতে পণ্য উঠানামা রেকর্ড গড়ে ২ লাখ ৮০ হাজার এককে উন্নীত হয়। তবে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে কন্টেইনার উঠানামা হয়েছিল ২ লাখ ৮৫ হাজার একক।
জানতে চাইলে বিদেশি জাহাজ পরিচালনকারী জিবিএক্স লজিস্টিকস লিমিটেডের অ্যাসিসট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মুনতাসির রুবাইয়াত বলছেন, নিশ্চিতভাবেই বলা যায় করোনা মহামারির মধ্যেই কারখানা-ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সচল করে দেওয়ার মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী সিদ্ধান্তের ফলেই দেশের অর্থনীতির গতি ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। এর সুফল দেখা যাচ্ছে বন্দরের পণ্য উঠানামায়।
তিনি বলছেন, বিশ্বব্যাপি কভিড ধাক্কা কাটিয়ে যে কটি দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে তাদের মধ্যে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম অন্যতম। দেখুন সেসময় যদি কারখানার উৎপাদন শুরু না হতো তাহলে বাংলাদেশ বিদেশি ক্রেতার অর্ডার কি পেতাে? আমরা আশা করছি দেশের ধারাবাহিক এই প্রবৃদ্ধি আগামীতে অব্যাহত থাকবে।