আগামী ১৫মে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ইংল্যান্ডের ব্যস্ততম বন্দর লিভারপুলে পণ্য পরিবহনে সরাসরি কন্টেইনার জাহাজ সার্ভিস চালু হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে তিনটি জাহাজ দিয়ে এই পণ্য পরিবহন সেবা শুরু হবে; প্রতি ১০ দিন পর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে লিভারপুলের উদ্দেশ্যে জাহাজ ছেড়ে যাবে।
চট্টগ্রাম ছেড়ে যাওয়ার পথে জাহাজটি প্রথমে ইউরোপের ব্যস্ততম বন্দর নেদারল্যান্ডসের রটারডামে পৌঁছবে; সময় লাগবে ২০-২২দিন। সেই বন্দরে বেশিরভাগ পণ্য নামিয়ে একদিন পর লিভারপুল বন্দরে পৌঁছবে। এরমধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম-ইংল্যান্ড এবং চট্টগ্রাম-নেদারল্যান্ড রুটে সরাসরি রপ্তানি পণ্য পরিবহন সেবা শুরু হবে। যাতে প্রধানত দেশের রপ্তানিকারকরা সবচে বেশি উপকৃত হবেন।
চট্টগ্রাম-রটারড্যাম-লিভারপুল রুটে পণ্য পরিবহন চালু করছে লন্ডনভিত্তিক ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার প্রতিষ্ঠান ‘অলসীস গ্লোবাল লজিস্টিকস’। প্রতিষ্ঠানটির দেশিয় শিপিং এজেন্ট ফনিক্স শিপিংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যাপ্টেন সৈয়দ সোহেল হাসনাত বলেন, আমাদের প্রতিটি জাহাজ হচ্ছে অপেক্ষাকৃত বড় আকারের, ১৫শ একক থেকে ১৮শ একক কন্টেইনার ধারনক্ষমতার। প্রতি ১০ দিন পর জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দর ছাড়বে। ২০-২১ দিন পর রটারড্যাম বন্দরে পৌঁছবে। এরপরদিন পৌঁছবে লিভারপুলে। ফিরতি পথে লিভারপুল থেকে যাত্রা শুরু করে রটারড্যামে পণ্য বোঝাই করে আবারো চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দিবে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম-রটারড্যাম-লিভারপুল রুটের প্রথম জাহাজটি হচ্ছে ‘এমভি এমো’। বর্তমানে সেটি চীনের বন্দর আছে। সেখান থেকে কিছু খালি কন্টেইনার বোঝা্ই করে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছবে। ১৫ মে চট্টগ্রাম থেকে ৬শ থেকে ৭শ একক রপ্তানি কন্টেইনার বোঝাই করে যাত্রা শুরু করবে লিভারপুলের উদ্দেশ্যে। পরবর্তী জাহাজে তাদের রপ্তানি কন্টেইনার ১ হাজার একক ছাড়িয়ে যাবে।
‘অলসীস গ্লোবাল লজিস্টিকস এমন এক সময়ে চট্টগ্রাম-রটারড্যাম-লিভারপুল রুটে পণ্য পরিবহন শুরু করতে যাচ্ছে, যখন সুইজারল্যান্ডের ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার প্রতিষ্ঠান ‘কমোডিটি সাপ্লাইজ এজি’। আগামী মে মাসের শেষ সপ্তাহে চট্টগ্রাম থেকে স্পেনের বার্সেলােনা এবং নেদারল্যান্ডসে রটারডামে সরাসরি কনটেইনারে পণ্য পরিবহনে তিনটি জাহাজ নামানোর পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। কিন্তু অনুমোদন পেয়ে তাদের আগে আগামী ১৫ মে থেকেই সরাসরি পণ্য পরিবহন সেবা চালু করছে ‘অলসীস গ্লোবাল লজিস্টিকস’।
বাংলাদেশের মোট পণ্য রপ্তানির ৪৫ শতাংশই রপ্তানি হয় ইউরোপের দেশগুলোতে। এরমধ্যে সবচে বেশি পণ্য রপ্তানি হয় জার্মানীতে, দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ইংল্যান্ড। এখন পর্যন্ত জার্মানীতে সরাসরি পণ্য পরিবহন সেবা চালু হয়নি। তবে ইংল্যান্ড রুটে পণ্য পরিবহন সেবা চালু হয়ায় অসম্ভব খুশি তৈরী পোশাক রপ্তানিকারকরা।
এশিয়ান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ সালাম বলছেন, ইউরোপের সব বন্দরে যে আমাদের জাহাজ থামবে সেটির দরকার পড়ে না। কারণ ইতালিতে সরাসরি সার্ভিসের এখন যে জাহাজটি যাচ্ছে সেই পণ্য রেভেনা বন্দর থেকে নেমেই সড়কপথে জার্মানীর হামবুর্গ যাচ্ছে। ফলে ইউরোপে পণ্য পরিবহনে দেশগুলো পরস্পরের জন্য উম্মুক্ত।
তিনি বলেন, এখন রটারড্যাম বন্দরে গেলেই অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে পণ্য রপ্তানি। আমরা বিশ্বের তৈরী পােশাক শিল্পের প্রতিযোগিদের চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে যাবো।