মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুতকেন্দ্রের জেটিতে এক বছরে ৪৯টি পণ্যবাহি জাহাজ ভিড়েছে; সবগুলো জাহাজই বিদ্যুত কেন্দ্রের নির্মান সামগ্রী বোঝাই করে বিভিন্ন দেশ থেকে কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে ভিড়েছে। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের পথে এটি একটি বড় মাইলফলক।
কক্সবাজারের মাতারবাড়ী কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে প্রথম পণ্যবাহি জাহাজ ভিড়ে ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর। তখন জাহাজ প্রবেশের জন্য নির্মিত চ্যানেল দিয়ে প্রথমবার প্রবেশ করে বাণিজ্যিক জাহাজ। এর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছিল মাতারবাড়ী চ্যানেল। মূলত মাতারবাড়ী কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য নির্মিত হেভি লিফট বা ভারী কার্গো নামানোর জন্য এই জেটি ব্যবহৃত হচ্ছিল।
এরপর থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত ছয় মাসে ১৭টি বাণিজ্যিক জাহাজ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণসামগ্রী নিয়ে জেটিতে ভিড়েছিল। ২০২১ সালের ১৫ জুলাই নতুন আরেকটি জেটি চালু হয়। এরপর একসাথে দুটি জাহাজ দুটি জেটিতে ভিড়তে শুরু করে। বছর শেষে মোট ৪৯ জাহাজ ভিড়ার রেকর্ড করে মাতারবাড়ী।
মাতারবাড়ীতে জাহাজ ভেড়ানোর মূল সমন্বয়কারী এবং চট্টগ্রাম বন্দরের সহকারী হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন আতাউল হাকিম সিদ্দিকী বলেন, এটা অবশ্যই আমাদের জন্য গৌরবের। মাত্র এক বছরেই আমরা ৪৯টি পণ্যবাহি জাহাজ জেটিতে ভিড়ার রেকর্ড করেছি। এখন শুধুমাত্র কয়লাবিদ্যুত কেন্দ্রের নির্মান সামগ্রী বোঝাই জাহাজই জেটিতে ভিড়ছে। ভবিষ্যতে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হলে এখানে দেশের সবচে বড় জাহাজ জেটিতে ভিড়তে পারবে।
জানা গেছে,কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের আগে প্রস্তুত হয়েছে আড়াই শ মিটার প্রস্থ, ১৮ মিটার গভীরতা এবং ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যানেল। এই চ্যানেল বা প্রবেশপথ দিয়েই বঙ্গোপসাগর থেকে জাহাজ বন্দর জেটিতে প্রবেশ করছে। গভীর সাগর থেকে জাহাজগুলো চ্যানেল দিয়ে জেটিতে প্রবেশের জন্য বসানো হয়েছে পথনির্দেশক বয়। প্রবেশ চ্যানেলের সক্ষমতা থাকলেও এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৯ মিটার গভীরতা বা ড্রাফট এবং ১৩৫ মিটার পর্যন্ত জাহাজ জেটিতে প্রবেশ করেছে।
বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে পণ্য নামানোর কাজটি করে শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর। চট্টগ্রাম বন্দরের নিবন্ধিত ৩২টি অপারেটর প্রতিষ্ঠান পর্যায়ক্রমে সেই কাজটি করার কথা। কিন্তু বাংলাদেশ শিপ হ্যান্ডলিং ও বার্থ অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম শামসুজ্জামান রাসেল বলেন, রোটেশনে এখন পর্যন্ত ৭/৮ জন অপারেটর এই কাজটি করছেন।