উদ্বোধনের পর জেটিতে পণ্য না নামিয়ে বহির্নোঙরে গেল ‘কমন এটলাস’

আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর জেটিতে পণ্য না নামিয়েই চট্টগ্রাম বন্দর জেটি ছাড়লো ‘কমন এটলাস’ জাহাজ। গতকাল সোমবার বন্দরের চিটাগাং কন্টেইনার টার্মিনাল (সিসিটি) এ ২শ মিটার দীর্ঘ এবং ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ জেটিতে ভিড়ার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। উদ্বোধনের পর জেটিতে পণ্য না নামিয়েই বন্দর থেকে বহির্নোঙরে গেল জাহাজটি।এই অবস্থায় বিষয়টি নতুন আলোচনার জন্ম দিচ্ছে। বলা হচ্ছে, তড়িঘড়ি করে এখনই উদ্বোধনের কী দরকার ছিল। ত্রুটি-বিচ্যুতি দুর করে একমাস পর পুরোদমে জাহাজ চলাচল শুরুর আনুষ্ঠানিকতা করলেই বিষয়টি শোভন হতো।
জানা গেছে, শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের জন্যই জাহাজটি জেটিতে আনা হয়েছিল। জাহাজটি মুলত বহির্নোঙরে পন্য নামিয়েই বন্দর ত্যাগ করবে। জেটিতে পণ্য নামবে না সেজন্য আগে থেকেই কোন বার্থ অপারেটর বরাদ্দ দেয়া হয়নি।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দরের এক কর্মকর্তা বলেন, মন্ত্রী মহোদয় উদ্বোধন করলেও সেটি ছিল কেবল আনুষ্ঠানিকতা। এখন আমরা পরীক্ষামূলক জাহাজ ভিড়াচ্ছি। পুরোদমে চালু হলেই কেবল জাহাজ থেকে পণ্য নামবে। সেজন্য জাহাজটি বহির্নোঙরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরে ১৯৭৫ সালে দৈর্ঘ্যে ১৬০ মিটার ও ৭ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়তে পারত। পরবর্তী সময়ে ১৯৮০ সালে ১৭০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৮ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফট, ১৯৯০ সালে ১৮০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৮ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফট, ১৯৯৫ সালে ১৮৬ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৯ দশমিক ২ মিটার ড্রাফট এবং সবশেষ ২০১৪ সালে ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৯ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভেড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। গত সোমবার তা বেড়ে জাহাজের দৈর্ঘ্য ২০০ মিটার এবং ড্রাফট ১০ মিটারে উন্নীত করা হলো।
দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সামাল দিতে যেহারে জেটি-টার্মিনাল চালুর কথা ছিল; সেটি হয়নি। আর বহুল প্রত্যাশিত ’বে টার্মিনাল’ এবং পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল (পিসিটি) যথাসময়ে চালু না হওয়ায় বাড়তি প্রবৃদ্ধি সামাল দেয়া চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়ছিল বন্দরের। এই অবস্থায় প্রবৃদ্ধির সাথে তাা মিলাতে বিকল্প হিসেবে কর্ণফুলী নদী খনন করে বড় জাহাজ ভিড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বন্দর কর্মকর্তারা বলছেন, বিদ্যমান জেটি, যন্ত্রপাতি, জনবল দিয়ে শুধুমাত্র বড় জাহাজ ভিড়িয়ে বছরে ৫-৭ লাখ একক বাড়তি কন্টেইনার উঠানামা করা সম্ভব। এরফলে সক্ষমতা বাড়লো দেশের প্রধান চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের।
এ আগে বড় জাহাজ ভিড়ানোর সক্ষমতা যাচাই করতে যুক্তরাজ্যের প্রতিষ্ঠান ওয়েলিংফোর্ডকে দিয়ে জরিপ চালিয়ে ইতিবাচক সাড়া পায় বন্দর। সুপারিশ অনুযায়ী জেটিতে ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ আনতে সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা হয়। কর্ণফুলী নদীর গুপ্তবাঁক কিছুটা সহজ করা হয়; আউটার বারে নিয়মিত নদী খনন চলছে।