২০১৮ সালে আমদানিকরা ছাড় না নেয়া ৬০৯ ড্রাম হাইড্রোজেন পার–অক্সাইড আজ সোমবার জরুরিভাবে নিলামে তোলা হচ্ছে। এতদিন নানা জটিলতায় নিলামে তুলে বিক্রি করতে না পারলে আজ সোমবার বিকেল চারটায় প্রকাশ্য নিলামে তুলে এসব রাসায়নিক বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস।
মুৃলত গত শনিবার সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড থেকে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ৪৯ জন নিহত হন। আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ। ডিপোর একটি কনটেইনারে আগুন লাগার পর আশপাশে থাকা শেড ও কনটেইনারে থাকা হাইড্রোজেন পার–অক্সাইডে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে।এ ঘটনার পর বন্দর কর্তৃপক্ষ বিপজ্জনক পণ্য নিলামে তোলার জন্য গতকাল রবিবারই কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়। চিঠি পাওয়ার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে সেগুলো নিলামে তুলে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়।
কাস্টমসের উপকমিশনার আলী রেজা হায়দার বলেন, দুই কনটেইনারের চালানটি আজ রবিবারই প্রকাশ্য নিলামে তোলা হবে। সংরক্ষিত দামের ১০ শতাংশ পে–অর্ডার বা নগদ টাকা দিয়ে আগ্রহীরা নিলামে অংশ নিতে পারবেন।
কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, গাজীপুরের কেয়া নিট কম্পোজিট লিমিটেড তুরস্ক থেকে চার বছর আগে হাইড্রোজেন পার–অক্সাইডের চালানটি নিয়ে আসে। আমদানির পর প্রতিষ্ঠানটি সেগুলো খালাস করেনি। এরপর থেকে দুই কনটেইনারের চালানটি বন্দরের চত্বরে পড়ে আছে। চালানটিতে ৩০ হাজার ৪৫০ কেজি হাইড্রোজেন পার–অক্সাইড রয়েছে। এই চালানের সংরক্ষিত দাম ধরা হয়েছে ২৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
হাইড্রোজেন পার–অক্সাইড টেক্সটাইল, ডাইংসহ নানা শিল্পে ব্যবহার করা হয়। এই পণ্য একসময় আমদানি হলেও বর্তমানে রপ্তানি হচ্ছে।
২০২০ সালে লেবাননের বৈরুতের বন্দরে বিস্ফোরণের ঘটনার পর চট্টগ্রাম বন্দরে ২৮ বছরের পুরোনো ‘বিপজ্জনক পণ্য’ ২০২০ সালের আগস্টে ধ্বংস করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। দুই দফায় ৫৯ টন বিপদজনক পণ্য ধ্বংস করা হয়েছিল।
এর ধারাবাহিকতায় গত ২৫ মে হাইড্রোজেন পার–অক্সাইডের একটি চালান প্রকাশ্য নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। ওই চালানে ৩১৫ ড্রামে ২০ হাজার ৪৭৫ কেজি হাইড্রোজেন পার–অক্সাইড ছিল। মোট ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকায় সর্বোচ্চ দরদাতার কাছে এই রাসায়নিক বিক্রি করা হয়। নিলামের পরদিনই খালাস নেন সর্বোচ্চ দরদাতা।
কাস্টমসের উপকমিশনার মো. আল আমিন বলেন, বন্দরের পি শেডে যেসব বিপজ্জনক পণ্য ছিল, সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে রাসায়নিক পণ্য নিলামে তুলে বিক্রি করা হয়েছে। নিলামে তোলার অপেক্ষায় থাকা এই চালান ছাড়া বন্দরে হাইড্রোজেন পার–অক্সাইডের নিলামযোগ্য কোনো কনটেইনার নেই।