শিপিং বিষয়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অরগানাইজেশন এর কাউন্সিল নির্বাচনে বাংলাদেশের হারের পর অবস্থান সুদৃঢ় করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে, লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশনে মেরিটাইম বিষয়ে অভিজ্ঞ একজন কাউন্সিলর নিয়োগ। আই এম ও তে ভুলত্রুটি শুধরে বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিতে নতুন একটি পদ (কাউন্সিলর, মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স) সৃষ্টি করে সেখানে নিয়োগ দেয়া হয়েছে ক্যাপ্টেন কাজী এবিএম শামীমকে। ১৮ নভেম্বর ২০২১ সালে সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় থেকে তাকে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে গিয়ে সেই নিয়োগ রহস্যজনক কারণে আটকে গেছে। এরফলে দুই মাসে তিনি যোগ দিতে পারেন নি কাজে।
এই ধরনের ঘটনাকে দুঃখজনক এবং দেশের মেরিটাইম সেক্টরের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতে বাধা হিসেবে দেখছেন মেরিটাইম সংশ্লিষ্টরা।
জানতে চাইলে মেরিটাইম বিশেষজ্ঞ ক্যাপ্টেন জিল্লুর রহমান ভূঁইয়া বলছেন, দেশের মেরিটাইম সেক্টরের স্বার্থরক্ষা করতেই খুবই দ্রুত নতুন পদ সৃষ্টি করে তাকে নিয়ােগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এটা আমাদের দেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধির জন্য একটি ইতিবাচক বিষয় ছিল। কিন্তু দুই মাসে সেই পদে যোগদানের চুড়ান্ত অনুমতি মিলেনি। পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে গিয়ে সেটি কী কারণে আটকে আছে বুঝতে পারছি না।
আইএমও তে বিশেষজ্ঞ হিসেবে ১৩ বছর ধরে কর্মরত জিল্লুর রহমান ভূঁইয়া বলছেন, আগামী ১৭ জানুয়ারি নতুন নির্বাচিত কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হবে। ১৭৯ দেশের মধ্যে হয়তো দেখা যাবে বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি নাই। এরফলে মেরিটাইম সেক্টরের বাংলাদেশের সঠিক প্রতিনিধিত্ব থাকল না শুধুমাত্র চুড়ান্ত অনুমোদন না পাওয়ায়।
জানা গেছে, ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম কাউন্সিল নির্বাচনে বাংলাদেশের নির্বাচিত হওয়া খুবই জরুরি ছিল মেরিটাইম বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, কাউন্সিলে বাংলাদেশের দুর্বল নেতৃত্ব এবং মেরিটাইম বিশেষজ্ঞ না থাকায় আমরা হেরেছি। বাংলাদেশ সবসময় কূটনৈতিক বা সরকারী কর্মকর্তা দিয়েই উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চেয়েছে। কিন্তু এই সেক্টরটা বিশেষায়িত কাজ; মেরিটাইম সেক্টরের বিশেষজ্ঞ নেতৃত্বের উপস্থিতি ছাড়া এই কাজটি করা কঠিন। বিশ্বের সব দেশই বিশেষজ্ঞ দিয়েই স্থায়ী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করেছে।
এই পরিস্থিতি উত্তরণে সরকার গত ১৮ নভেম্বর একটি নতুন পদ সৃষ্টি করে সেখানে নিয়োগ দিয়েছেন ক্যাপ্টেন কাজী এ বি এম শামীমকে। কিন্তু দুই মাসে তিনি যোগ দিতে পারেন নি।
জানতে চাইলে ক্যাপ্টেন কাজী এ বি এম শামীম বলছেন, আমি ডকুমেন্টারি সব কিছু জমা দিয়েছি অনেক আগেই। কিন্তু চুড়ান্ত অনুমোদন না পাওয়ায় কাজে যোগ দিতে পারছি না। এর বেশি কিছু আমি বলতে পারব না।